চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা নদীতে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী মাথাভাঙ্গা নদীতে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। নদীর বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দেয়ার ফলে স্রোত বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মাছ শিকারীরা এমনভাবে বাঁশ, চাটাই, পলিথিন ও জাল দিয়ে নদীর এপাড় ওপাড় ঘিরেছে, মাছের ডিম পর্যন্ত ফঁসকে যেতে পারছে না। এভাবে দেশীয় প্রজাতির মাছ নিধন করা হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা শহরের হাটকালুগঞ্জ এলাকায় গেলেই চোখে পড়ে ছোট-বড় শতাধিক বাঁধ।
মাথাভাঙ্গা পদ্মার একটি শাখা নদী। কুষ্টিয়া থেকে শুরু হয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলার বুক চিরে ভারতে ঢুকেছে। শুকনো মৌসুমে এ নদীর উৎসমুখ পলিতে আটকা পড়লেও সারা বছর স্রোত বয়ে যায় নিজস্ব ঝরনা প্রবাহের মাধ্যমে। এ কারণেই মাথাভাঙ্গা নদীটি ঐতিহ্যবাহী। মাথাভাঙ্গার সেই ঐতিহ্যে ভাটা পড়েছে কয়েক বছর আগে থেকেই। এ নদীর মাছ সুস্বাদু হওয়ায় লোলুপ দৃষ্টি থাকে কিছু অসৎ মৎস্য শিকারীর। তারা কিছু দূর পর পরই বাঁধ দিয়ে স্রোত আটকে দিয়ে মাছ শিকার করছে। চুয়াডাঙ্গা কেদারগঞ্জ পাড়ার রমজান আলী সবচেয়ে বড় বাঁধটি দিয়েছেন। তিনি আড়াআড়িভাবে নদীর এপাড় ওপাড় বরাবর বাঁধ দেয়ায় স্রোত বাঁধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এ কারণে পলি পড়ে নদীটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন এখানে কয়েক হাজার টাকার মাছ ধরা পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কেদারগঞ্জের রমজানসহ এলাকার শতাধিক ব্যক্তি বাঁশ, চাটাই, পলিথিন ও কারেন্ট জাল এমনভাবে বসিয়েছেন, তাতে মাছতো দূরের কথা মাছের ডিম পর্যন্ত ধরা পড়ে যাচ্ছে। কয়েক মাস আগে জাতীয় সংসদের হুইপ চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের এমপি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন মাথাভাঙ্গা নদী থেকে বাঁধ অপসারণ অভিযান উদ্বোধন করেন। তার নির্দেশ উপেক্ষা করে মাথাভাঙ্গায় বাঁধ দেয়ায় অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। এলাকাবাসী জানিয়েছে, অনেক সরকারি কর্মকর্তার বাড়িতে মাছ শিকারীরা মাছ দিয়ে আসে। এ কারণে নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয় না। এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য অফিসার মো. ফজলুল হক মাছ নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘জেলেদের মাছ কেন অফিসারের খাবে। যারা নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করছে তারা নদীর শত্র“, আমাদের সকলের শত্র“। তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

Mathabhanga