কমান্ডো অভিযানে মালির জিম্মি সঙ্কটের রক্তাক্ত অবসান

মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: মালির রাজধানী বামাকোর একটি বিলাসবহুল হোটেলে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা অস্ত্রের মুখে ১৭০ জনকে জিম্মি করার পর তার অবসান ঘটেছে বিশেষ বাহিনীর কমান্ডো অভিযানের মধ্য দিয়ে।
গতকাল শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় বন্দুকধারীরা রেডিসন ব্লু হোটেলে বিদেশি নাগরিকসহ মোট ১৭০ জনকে জিম্মি করার পর জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষী এবং মার্কিন ও ফরাসি বাহিনীর সহযোগিতায় মালির বিশেষ বাহিনী এই অভিযান চালায়। অভিযান শেষে সেখানে ২৭ জনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে শান্তিরক্ষীদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে রয়টার্স। দেশটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, মার্কিন মালিকানাধীন ওই হোটেলে আর কোনো জিম্মি নেই।
স্থানীয় এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অন্তত ১০ জন বন্দুকধারী ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনী দিয়ে গুলি চালাতে চালাতে হোটেল ভবনে ঢোকে। তবে হোটেল পরিচালনাকারী কোম্পানি বলেছে, হামলাকারী ছিলো দুজন। প্যারিসে জঙ্গি হামলায় ১২৯ জন নিহতের ঘটনার রেশ না কাটতেই বামাকোর পশ্চিম অংশে এই হামলার ঘটনা ঘটলো। আল-কায়েদার সাথে জড়িত একটি আফ্রিকান জিহাদি গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেছে। মালির উত্তরাঞ্চলের আল-মৌরাবিতউন নামের ওই গোষ্ঠী এক টুইটে ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বন্দুকধারীরা কূটনৈতিক লাইসেন্স প্লেট লাগানো একটি গাড়িতে করে আসে। তারা মুখোশ পরা ছিলো। হোটেলের প্রবেশপথে নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের থামানোমাত্র গোলাগুলি শুরু হয়। ২০১২ সালে মালির উত্তরাঞ্চল দখল করেছিলো জঙ্গিরা। এদের কারও কারও সাথে আল কায়েদারও যোগ ছিলো। ফরাসি বাহিনী সামরিক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে উৎখাত করলেও মাঝে মধ্যেই সেখানে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। গত অগাস্টে সন্দেভাজন জঙ্গিরা মালির মধ্যাঞ্চলের এক শহরের একটি হোটেলে অতিথিদের জিম্মি করে জাতিসঙ্ঘের পাঁচ কর্মীসহ ১৩ জনকে হত্যা করে। আল কায়েদা সংশ্লিষ্ট জঙ্গিরা দেশটির উত্তরাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রাজধানী বামাকো দখলের হুমকি দেয়ার পর ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে সেখানে সেনা মোতায়েন করে ফ্রান্স।
শুক্রবারের এ হামলার পর মালির সেনা, পুলিশ এবং বিশেষ বাহিনীসহ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী ও ফরাসি সেনারা ঘটনাস্থলে যায়। ভবনের বিভিন্ন তলায় জিম্মিদের মুক্ত করার অভিযানে মালির বিশেষ বাহিনীকে সহায়তা দেয় জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী। মালির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বোওবাকার কেটিয়া চাদ এক সম্মেলনে ছিলেন। হামলার খবর পেয়ে তিনি দেশে ফিরে যান। ওই হোটেলে জিম্মিদের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনী হোটেল টার্কিশ এয়ারলাইন্সের কর্মী, গিনির এক সঙ্গীতশিল্পী এবং যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরাও ছিলেন।