ইসলামী ব্যাংক চুয়াডাঙ্গা শাখার অভ্যন্তর কি চোর প্রতারকদের নিরাপদ স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে? অল্প ক’দিনের ব্যবধানে ব্যাংকের ‘ক্যাশ কাউন্টার’র সামনে থেকে এক গ্রাহকের টাকার ব্যাগ কাটে চোর। এক লাখ ৬২ হাজারের মধ্যে ১০ হাজার টাকা চুরি করে সটকালেও গত ১০ দিনে চোর ধরা পড়েনি। অথচ নিরাপত্তা ক্যামেরায় ধারণ করা হয়েছে ছবি। ব্যাগ কেটে টাকা চুরির ক’দিনের মাথায় গত পরশু ব্যাংকের ভেতরেই টাকা ভাঙিয়ে দেয়ার সময় নোট-বিভ্রাটে ফেলে ২৫ হাজার দিয়ে ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে সটকেছে প্রতারক। প্রতারণার শিকার নারী টাকা হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন।
প্রতারকরা কোথায় যে কখন কীভাবে ফাঁদ পেতে প্রতারণা করবে তা আগেভাগে বোঝা অসম্ভব হলেও এমন কিছু স্থান আছে যেখানে বাড়তি নিরাপত্তা মূলত আস্থা অটুট রাখার জন্যই দরকার। ব্যাংকের মধ্যে অতো মানুষ, ব্যাংকে তো টাকা লেন হচ্ছেই। কতোজন টাকা জমা দিচ্ছে, নিচ্ছে। এখানে আবার চোর আসে নাকি? সরল সোজা গ্রাহকদের এরকম সরল বিশ্বাসের কারণেই প্রতারকচক্র এসব স্থানে ঘুর ঘুর করে। সুযোগ বুঝে প্রতারণা করে সটকে পড়ে। তবে ব্যাংকে কে কোন কাজে কেন আসে, আসছে, এসে দীর্ঘ সময় কে কী করছে তা নজরদারির দাবি রাখে। ক্যামেরায় ছবি ধারণ করলেই তো আর নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় না, তা পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার মতো দক্ষ চৌকশ ব্যক্তি নিযুক্ত না করেই কি বলা যায়, ওটা নিরাপত্তা ক্যামেরা? ইংরেজি বর্ণমালার ৪টি সি’ তথা সিসিসিসি দিয়ে যা বোঝানো হয়েছে, তা মূলত, ক্লোজ সার্কিট সিকিউরিটি ক্যামেরা। তাছাড়া এই ক্যামেরায় ধারণকৃত ছবির মাধ্যমে দোষী শনাক্ত করে আইনে সোপর্দ করার বিশেষ দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ের কর্তাদেরও নয় কি? উদাসীনতায় অপরাধীদের অপরাধের মাত্রা শুধু বৃদ্ধিই পায় না, বাদরের সেই গল্পের মতো কর্তার মাথায় উঠে হিসু করার মতোই সাহসী হয়। বার বার পার পেলে কর্তার বিরুদ্ধে বড় ধরনের সর্বনেশে সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো ধৃষ্টতা দেখাতে কতোক্ষণ?
দিন বদলের সাথে সাথে বদলে যাচ্ছে যেমন চুরি প্রতারণার ধরন, তেমনই বিজ্ঞান হাতের নাগালে পৌঁছে দিচ্ছে চোর প্রতারক ধরার নানা প্রযুক্তি। আগে মোবাইলফোন চুরি হলে হাহুতাশই ছিলো করণীয়। এখন? চুরি হলে নিজেই তা নিরাপত্তা কোডের মাধ্যমে অকেজো করে দেয়া যাচ্ছে। আর ঘরে-বাইরে চুরি? ওই যে সিসিসিসি! কোনো ব্যাংক অভ্যন্তরে একের পর এক অপরাধমূলক ঘটনা ঘটিয়ে চোর প্রতারক পালাবে আর সংশ্লিষ্টরা নামকাওয়াস্তে কিছু করে দায় এড়াবেন তা হয় না। প্রতিষ্ঠানের ওপর সরল-সোজা মানুষগুলোর আস্থা অটুট রাখতে অবশ্যই দরকার বাড়তি দায়িত্বশীলতা।