প্রয়োজনে সাত খুনে পুনতদন্ত :নূর হোসেনকে রিমান্ডে না নিলে জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি হবে : মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান

স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, ‌‌‌‌চার্জশিট দেয়া হয়েছে বলেই যে নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার আসামি নুর হোসেনকে রিমান্ডে নেয়া যাবে না,এটা ঠিক নয়। তার কাছে এমন কিছু তথ্য রয়েছে যা রিমান্ডে নিলে বেরিয়ে আসতে পারে। এটা না করলে জনমনে সন্দেহ দেখা দেবে। তাই রাষ্ট্রের উচিত হবে তাকে রিমান্ডে নেয়া। প্রয়োজনে পুনঃতদ্ন্ত করতে হবে।

স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, ‌‌‌‌‌চার্জশিট দেয়া হয়েছে বলেই যে নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার আসামি নুর হোসেনকে রিমান্ডে নেয়া যাবে না, এটা ঠিক নয়। তার কাছে এমন কিছু তথ্য রয়েছে যা রিমান্ডে নিলে বেরিয়ে আসতে পারে। এটা না করলে জনমনে সন্দেহ দেখা দেবে। তাই রাষ্ট্রের উচিত হবে তাকে রিমান্ডে নেয়া। গতকাল রোববার বেলা ২টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে সকলের জন্য মানবাধিকার প্রসঙ্গ অস্পৃশ্যতা শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথাগুলো বলেন।, হরিজন সম্প্রদায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন ‘দেশে ৫৫ লাখ দলিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষ প্রায় ১৫ লাখ। অনগ্রসর দলিতদের একটি অংশ হরিজনরা শুধু আবর্জনা পরিষ্কার, মলমূত্র নিষ্কাশনসহ সমাজের নিম্ন শ্রেণির কাজে নিয়োজিত। এই পেশা অবলম্বনের জন্য তারা সামাজিকভাবে অবহেলিত ও বঞ্চিত। প্রতিযোগিতামূলক আজকের পৃথিবীতে মানুষের নিরন্তর পথচলা দিগ্বিদিক। সব কিছু পেছনে ফেলে মানুষ শুধু সামনের দিকে ছুটছে। ‘মানুষ’ পরিচয়টা সেখানে মুখ্য আর সবকিছু গৌণ হয়ে পড়ছে। কিন্তু তারপরও কথা থেকে যায়। সেটা হচ্ছে হরিজনদের কথা। অস্পৃশ্য হিন্দু সম্প্রদায়কে দেয়া গান্ধীজি প্রদত্ত নাম। সেই হরিজনদের কোনো পরিবর্তন নেই। হরিজনরা দিনাতিপাত করছে অন্য এক জগতের বাসিন্দা হয়ে। অথচ ওদের ঝাড়ুর ছোঁয়ায় পুরো নোংরা শহর চকচকে হয়ে ওঠে প্রতিদিন। তারপরও ওই দুঃখী মানুষগুলোর খোঁজ রাখে না কেউ।’ চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে সকলের জন্য মানবাধিকার প্রসঙ্গ অস্পৃশ্যতা সেমিনারে উপরোক্ত মন্তব্য করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান ও হরিজন মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব রম্ভুনাথ বাঁশফোড়। বক্তারা বলেন, সংবিধানে সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হলেও হরিজন সম্প্রদায় তা থেকে বঞ্চিত। তারা এ বৈষম্য দূরীকরণের দাবি জানান। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরা, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রাজ্জাক, দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান মাও. আজিজুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেএম মামুনউজ্জামান, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদুর রহমান, আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহমেদ কামরুল হাসান, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান, বাংলাদেশ হরিজন মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রথিক বাদল, মহাসচিব রম্ভুনাথ বাঁশফোর, সাংগঠনিক সম্পাদক সুদর্শন বাঁশফোর, যুগ্ম মহাসচিব বিশ্বজিৎ হরিজন, জেলা মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আলী মর্তুজা কচি, চুয়াডাঙ্গা হরিজন সম্প্রদায়ের সভাপতি রামচন্দ্র বাঁশফোড়, সাধারণ সম্পাদক রাম প্রশাদ বাঁশফোড়, এনডিসি মুনিবুর রহমান, সহকারী কমিশনার মুসফিকুল আলম হালিম, সৈয়দা নাফিজ সুলতানা, টুকটুক তালুকদার, ফারজানা খানমসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ।

প্রধান অতিথি প্রসঙ্গক্রমে বলেন, ‌‍‌‌‌‌‌হরিজন সম্প্রদায়ের শিশুরা মেথরের ছেলে-মেয়ে হিসেবে অবহেলিত, সুবিধাবঞ্চিত। পড়ালেখার জীবনে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে কচি বয়সেই বড়দের মতো ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের কাজে লেগে যায়। সামাজিক দৃষ্টিতে হরিজনরা খুবই নিচু হওয়ায় মানুষের জীবনের মৌলিক অধিকারগুলো কখনোই এরা কল্পনা করতে পারে না। ন্যূনতম সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পায় না। অনেকে বিনা চিকিৎসায় মারা যায়। কিন্তু তাদের খবর কেউ রাখে না। অথচ তাদের ভোটাধিকার আছে। আছে সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার অধিকার। তাই সকল মানুষকে সমান মর্যাদা দিতে হবে। আর সমাজে যেসব বৈষম্য চলছে তা আর চলতে দেয়া যাবে না। বৈষম্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।