চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ সারাদেশে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন কার্যক্রম উদ্বোধন

স্টাফ রিপোর্টার: ‘ভিটামিন এ খাওয়ান শিশুমৃত্যুর ঝুঁকি কমান’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ সারাদেশে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল চত্বরে এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন, পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন। পাঁচ বছর বয়সী শিশু রিতা খাতুনকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর মধ্যদিয়ে চুয়াডাঙ্গায় জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন ২০১৫ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। ক্যাম্পেইন উদ্বোধনকালে সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল ইসলাম ও মেডিকেল অফিসার এহসানুল হক মাসুমসহ স্বাস্থ্য বিভাগীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সিভিল সার্জন জানান, জেলায় ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ১৫ হাজার ৯৭৩ ও এক থেকে পাঁচ বছর বয়সী ১ লাখ ১৭ হাজার ৪১৮ শিশুকে ভিটামিন এ খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তিনি আরও জানান, জেলায় ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ১৫ হাজার ৯৭৩ শিশুকে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং ১ থেকে ৫ বছর বয়সী ১ লাখ ১৭ হাজার ৪১৮ শিশুকে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এছাড়া বাদপড়া শিশুদেরকে খুঁজে বের করে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। জেলার ৯৬৯টি কেন্দ্রে একযোগে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, সারাদেশের ন্যায় আলমডাঙ্গা পৌরসভায় জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০১৫ পালিত হয়। গতকাল শনিবার সকাল ৮ টায় পৌর মেয়র আলহাজ মীর মহিউদ্দিন ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পৌর কাউন্সিলর কাজী আলী আজগর সাচ্চু, দীনেশ কুমার বিশ্বাস, আলাল উদ্দিন, ইলিয়াছ হোসেন, সাইফুল ইসলাম লাল্টু, নাসির উদ্দিন, শরিফুল ইসলাম রিফাত, আহমেদ হাসিব রেজা, পৌর কর্মচারী খাইরুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, রোকনুজ্জামান খান, মোস্তাক আহমেদ, আব্দুল জব্বার লিপু, এম হাফিজসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। আলমডাঙ্গা পৌরসভার ২৪টি স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে ও ১২টি ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রে ১২০ জন স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে ৪ হাজার ৩৯৫ শিশুর লক্ষ্যমাত্রায় ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। ক্যাম্পেইন পরিচালনায় পৌরসভার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন ।

দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৬-১১ মাস বয়সী শিশুদের একটি করে নীল রঙের এবং ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের একটি করে লাল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডস্থ কেন্দ্রে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক আবুল কাশেম ও উপজেলা সেনেটারি ইন্সপেক্টর আব্দুল মতিন ৬-১১ মাস বয়সী শিশুর মুখে নীল রঙের একটি ভিটামিন এ ক্যাপসুল তুলে দিয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ইউনিসেফের চুয়াডাঙ্গা জেলা পুষ্টি সহায়ক কর্মকর্তা রুমানা শারমিন দিনব্যাপী উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

উল্লেখ্য, এবার দামুড়হুদা উপজেলায় মোট ৬৮০ টি কেন্দ্রে ৬-১১ মাস বয়সী ৩ হাজার ৪৯১ শিশুকে একটি করে নীল রঙের এবং ১ থেকে ৫ বছর বয়সী ২৩ হাজার ৮৬০ শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিলো।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুরে ভিটামিন এ ক্যাপসুল ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে শিশুদের মুখে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল তুলে দিয়ে ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন সিভিল সার্জন ডা. মজিবুল হক। সারাদেশের ন্যায় মেহেরপুর জেলার তিনটি উপজেলায় ৪৯০টি কেন্দ্রে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এদিন ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ৭ হাজার ৯৯৩ শিশু এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৫৫ হাজার ৩৭৮ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। সিভিল সার্জন ডা. মজিবুল হক বলেন, ভিটামিন এ’র অভাবে আদরের সোনামণি অন্ধত্ব বরণ করতে পারে। শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। অস্বাভাবিক শরীর নিয়ে সারাজীবন বয়ে বেড়ানোর ঘটনা গোটা পরিবারকেই চরম কষ্টের সম্মুখীন করে। শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করে। ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল ও জটিলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই শিশুদের ভিটামিন এ’র অভাব পূরণে পরিবারকেই আগে সচেতন হতে হবে।

Leave a comment