কুষ্টিয়া ভেড়ামারায় গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যা গ্রেফতার ৩

 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া ভেড়ামারায় যৌতুকের টাকা না পেয়ে গৃহবধূ তাসলিমাকে (২৮) আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে পাষণ্ড স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। গত শনিবার বিকেলে বাহিরচর ইউনিয়নের ১৬ দাগ মধ্যপাড়া গ্রামে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাসলিমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার বিকালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে ভেড়ামারা থানা পুলিশ। তবে প্রধান আসামি স্বামী আরিফুল মালিথা পলাতক রয়েছে। তাসলিমা রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার পাল নারায়ণপুর গ্রামের আবু তালেব শেখের মেয়ে।

পুলিশ জানায়, যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূ তাসলিমাকে মাঝেমধ্যে নির্যাতন চালাতো স্বামী ও পরিবারের লোকজন। যৌতুকের টাকা না পেয়ে শনিবার বিকেলে তার গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময়ে তাসলিমার আর্তচিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে গৃহবধূর পিতা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করান। সোমবার তাসলিমার বাবা আবু তালেব শেখ বাদী হয়ে ভেড়ামারা থানায় ৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। আসামিরা হলেন- তাসলিমার স্বামী আরিফুল মালিথা, শ্বশুর নজরুল মালিথা, চাচাশ্বশুর আমিরুল মালিথা ও শামসু মালিথা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহ আলম জানান, তাসলিমার ৭ বছরের ১ মেয়ে ও ২ বছরের ১টি ছেলে রয়েছে। তাসলিমাকে পিতার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে দিতে বলে মাঝেমধ্যেই শারীরিক নির্যাতন চালাতো। তাসলিমার বাবা নির্যাতনের কথা জানতে পেরে কিছুদিন আগে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে যায়। এর কিছুদিন পর আবার ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। যৌতুকের টাকা না পেয়ে সোমবার বিকেলে স্বামী আরিফুল মালিথা, পিতা ও চাচার সহযোগিতা নিয়ে তাসলিমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। এ বিষয়ে তাসলিমার বাবা ভেড়ামারা থানায় ৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ভেড়ামারা থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধান আসামি স্বামী আরিফুল মালিথা পলাতক রয়েছে। তবে সে কোথায় অবস্থান করতে পারে সেখানে সেখানে অভিযান চালানো হচ্ছে। তাকে গ্রেফতারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।