তিন দিনেই জিতে গেলো ভারত

মাথাভাঙ্গা মনিটর: খেলা শেষ হতেই বিরাট কোহলি দলজিৎ সিংকে ধন্যবাদ দিয়ে আসতে পারতেন। মোহালি টেস্টে এমনই এক উইকেট বানিয়েছেন এ বর্ষীয়ান কিউরেটর যে তিন দিন পার করতেই দু দলের ব্যাটসম্যানদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। মাত্র তৃতীয় দিনেই পর্দা নেমে গেছে সিরিজের প্রথম টেস্টের। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১০৮ রানে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল ভারতীয় দল (১-০)।
টেস্টটি যে পাঁচ দিনে গড়াচ্ছে না তার আভাস পাওয়া গিয়েছিলো প্রথম দিনেই। স্বাগতিক দল তো অলআউট হয়েছিলোই, দক্ষিণ আফ্রিকা দলও হারিয়ে বসেছিলো দুই উইকেট। প্রথম দিন শেষে তাই রান আর উইকেটের টালিতে ২২৯ রান ও ১২ উইকেট। দ্বিতীয় দিনটাই ছিলো একটু অন্যরকম- ১০ উইকেটে ২৮১ রান। ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে দুই উইকেটেই ১২৫ রান উঠে যাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছিল উইকেটের চরিত্র পালটে যাচ্ছে। কিন্তু ৩৯ রানেই শেষ ৮ উইকেট হারিয়ে ২০০ রানে শেষ হয় ভারতের ইনিংস। ভয়ংকর এই উইকেটে বুক চিতিয়ে একাই লড়েছিলেন চেতেশ্বর পূজারা। ৭১ রান করেছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তার সাথে দলের অন্য ব্যাটসম্যানদের ছোটখাটো অবদানেই ২শ ছোঁয় ভারতের ইনিংস। প্রথম ইনিংসে ভারতের ১৭ রানের লিডের সুবাদে সফরকারীদের লক্ষ্যটা দাঁড়ায় ২১৮ রানের।
এই রান তাড়া করতে নেমেই দক্ষিণ আফ্রিকা ডন ব্র্যাডম্যানের স্মৃতি ফিরিয়ে আনলেন মাঠে। ১৯৩৭ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিরুদ্ধ কন্ডিশনে ব্যাটসম্যানদের রক্ষা করতে ইনিংসের শুরুতে বোলারদের ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন ব্র্যাডম্যান। সেবার সেটা দারুণ কাজে লেগেছিলো। গতকালও দক্ষিণ আফ্রিকা দল ভারনন ফিল্যান্ডারকে ওপেনিংয়ে নামিয়ে সেরকমই কিছু একটা করার আশা করেছিলো। কিন্তু দ্বিতীয় বলেই আউট হয়ে ফিল্যান্ডার ফিরে যাওয়ায় সেই জুয়া আর কাজে লাগেনি। ফিল্যান্ডারের পর মাত্র দশ রানের মধ্যেই আরও ২ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে প্রোটিয়ারা। দলীয় ৩২ রানের মাথায় এবি ডি ভিলিয়ার্স আউট হলে সব অনিশ্চয়তাই হারিয়ে যায় ম্যাচ থেকে। আর ৬০ রানের মাথায় দলের শেষ স্বীকৃত ব্যাটিং জুটির পতন ঘটার পর ভারতের অপেক্ষাটাই কেবল দীর্ঘায়িত করতে পেরেছেন স্টিয়ান ফন জিল এবং সাইমন হার্মার। দুজনে মিলে সপ্তম উইকেট জুটিতে ৪২ রান নিয়েলেন। ফন জিল করেছেন ৩৬ রান আর হার্মারের সংগ্রহ ১১ । কিন্তু সব বাধা পেরিয়ে তিনদিনেই ভারতকে ম্যাচ জিতিয়ে এনেছেন স্পিনাররা। রবীন্দ্র জাদেজা মাত্র ২১ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট। রবিচন্দ্রন অশ্বিন পেয়েছেন ৩ টি এবং অমিত মিশ্র নিয়েছেন ১ টি উইকেট।
গতকাল শনিবার পাঞ্জাব ক্রিকেট স্টেডিয়াম যেন পরিণত হয়েছিলো বধ্যভূমিতে। সারাদিনে পড়েছে ১৭ উইকেট। এর মধ্যে কেবল একটিই গিয়েছে পেসারদের দখলে। পুরো টেস্টেই অবশ্য পেসাররা অনেকটাই দর্শক হয়ে ছিলেন। দু দলের পেসাররা সবাই মিলেই এই টেস্টে পেয়েছেন মাত্র ৫টি উইকেট। বাকি ৩৫ টি উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়েছেন দু দলের স্পিনাররা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে স্পিন বিষে নীল করার পরিকল্পনাটা তাই ভালোই কাজে লেগেছে ভারতের। নাহ, দলজিৎ সিং কে ধন্যবাদ বলে আসাই উচিৎ কোহলির।