শাশুড়ি ও শিশু শ্যালিকাকে পুড়িয়ে মেরে পলাতক সেই কামালের পতন

স্টাফ রিপোর্টার: ঘুমিয়ে থাকা শাশুড়ি ও শিশু শ্যালিকার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে মারা জামাই কামাল হোসেন র্যা ব’র এনকাউন্টারে প্রাণ হারিয়েছে। শাশুড়ি-শ্যালিকাকে হত্যার ১৪ দিনের মাথায় গতপরশু রাতে ঝিনাইদহ-যশোর সড়কের কড়াইতলা নামক স্থানে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় ঘাতক জামাই। র্যা ব ও পুলিশ এ তথ্য দিয়ে বলেছে, ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি তাজা গুলি ও একটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকালই ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালমর্গে কামাল হোসেনের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়।
র্যা ব’র এনকাউন্টারের গুলিতে নিহত কামাল হোসেন (২৮) যশোর লেবুতলা এলাকার আগরাইল গ্রামের মৃত বাবুল হোসেনের ছেলে। সে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের ফারাশপুর গ্রামের তসলিমা খাতুন (৪০) ও তার দেড় বছর বয়সী শিশুকন্যা তাসমিয়াকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যামামলার আসামি। গত ১৯ অক্টোবর রাত ২টার দিকে গ্রিল থেকে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে মা-মেয়েকে পুড়িয়ে মারার পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলো কামাল।
র্যা ব-৬ ঝিনাইদহ আঞ্চলিক ক্যাম্প অধিনায়ক মেজর মো. সুরুজ মিয়া জানান, গত রোববার রাত দেড়টার দিকে কালীগঞ্জ-যশোর সড়কের কড়াইতলা নামক স্থানে একটি মোটরসাইকেলে চড়ে তিন জন আসে। এ সময় র্যা ব সদস্যরা তাদের গতিরোধ করার চেষ্টা করলে তারা উল্টো পথে পালানোর চেষ্টা করে। র্যা ব তাদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা গুলি ছুঁড়তে থাকে। র্যা বও পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় মোটরসাইকলের পেছনে বসে থাকা একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। বাকি দুজন পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিহত ব্যক্তি কামাল হোসেন বলে তার স্বজনরা শনাক্ত করে।
এদিকে জানা গেছে, ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের ফরাশপুরের নজরুল ইসলামের মেয়ে উর্মি খাতুনের সাথে আনুমানিক ৪ বছর আগে বিয়ে হয় যশোর লেবুতলা ইউনিয়নের আগ্রাইল গ্রামের মৃত বাবুল হোসেনের ছেলে কামাল হোসেনের। বিয়ের সময় কামাল হোসেন লেদ মিস্ত্রির কাজ করতো। ঢাকায় থাকতো। বিয়ের কিছুদিনের মাথায় স্ত্রী উর্মি খাতুনের সাথে মতবিরোধ দেখা দেয় কামালের। কামাল যৌতুক দাবি করে। উর্মি তার পিতার বাড়ি ফরাশপুরে অবস্থান নেয়। গত ১৯ অক্টোবর রাতে উর্মি খাতুন তার মা তাসলিমা খাতুনের পাশেই ঘুমিয়েছিলো। মায়ের কোলের মধ্যে ঘুমিয়েছিলো দেড় বছর বয়সী শিশু তাসমিয়া। বাড়ির গ্রিল থেকে পেট্রোল ঢেলে আগুন ছুড়ে মারে। আগুনে পুড়ে মারা যান তাসলিমা ও তার শিশুকন্যা তাসমিয়া। আহত হন উর্মি খাতুন ও তার পিতা। এ ঘটনার পর পুলিশ ও র্যা ব’র পদস্থ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জামাই কামাল হোসেনকে খুঁজতে শুরু করে। এলাকাবাসী কামালকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাতে থাকে। এরই মাঝে গতপরশু রোববার দিনগত রাত দেড়টার দিকে র্যা ব’র সাথে গুলির লড়াইয়ে নিহত হয় কামাল।
Jinade