শিশুসন্তান হত্যার দায়ে পিতার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

স্টাফ রিপোর্টার: নেশার টাকা চেয়ে না পেয়ে স্ত্রীর সাথে ঝগড়ার এক পর্যায়ে চার বছর বয়সী শিশুসন্তান নয়নকে হত্যার দায়ে ঘাতক পিতা কালু মৃধা ওরফে বিপ্লবের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক শিরীন কবিতা আখতার গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় দেন। আসামির উপস্থিতিতেই রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ের পর দণ্ডিত চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার পারলক্ষ্মীপুরের কালু মৃধা ওরফে বিপ্লবকে পুলিশ প্রহরায় জেলা কারাগারে নেয়া হয়।

মামলাসূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের পারলক্ষ্মীপুর গ্রামের মৃত হানেফ মৃধার ছেলে কালু মৃধা ছিলো নেশাখোর। ২০১৩ সালের ৭ ডিসেম্বর রাতে গাঁজা কেনার টাকা না পেয়ে স্ত্রী খাদিজা খাতুনকে মারপিট করে। এ সময় ঘুমিয়ে থাকা ৪ বছর বয়সী শিশু মুস্তাকিন নয়ন জেগে ওঠে। কান্না শুরু করে। স্বামীর মারপিটে স্ত্রী যখন নিজেকে সামলাতে ব্যস্ত, তখন নেশাখোর কালু মৃধা তার ছেলে নয়নকে তুলে আছাড় মারে। কুঞ্চি দিয়ে পিটিয়েও জখম করে। এক পর্যায়ে থেমে যায় সে। চৌকির নিচেয় ফেলে রাখা হয় মুস্তাকিনকে। রাতেই মারা যায় মুস্তাকিন ওরফে নয়ন। সকালে ঘুম থেকে উঠে চৌকির নিচে ছেলের লাশ দেখে চিৎকার করে ওঠেন কালু মৃধার স্ত্রী খাদিজা খাতুন। এ সময় এলাকাবাসী ছুটে আসে। ওইদিনই কালু মৃধাকে আসামি করে তার স্ত্রী খাদিজা খাতুন নিজের সন্তান হত্যার অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দায়ের করেন। অপরদিকে বাজারের লোকজন কালু মৃধাকে ধরে পিটুনি শেষে পুলিশে দেয়।

২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি আলমডাঙ্গার তিয়রবিলা ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই আছের আলী তদন্ত শেষে মামলার একমাত্র আসামি কালু মৃধার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট প্রদান করেন। আদালতের বিচারক মামলায় মোট ১২ জন সাক্ষী পরীক্ষা শেষে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছর কারাদণ্ড প্রদান করেন। রায় ঘোষণার পর কড়া নিরাপত্তায় আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।