চুয়াডাঙ্গায় পৃথক স্থানে বৃদ্ধসহ তিনজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু স্কুলছাত্রীর অপমৃত্যু নিয়ে পুলিশের সন্দেহ : লাশ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় পৃথক স্থানে এক স্কুলছাত্রী ও এক বৃদ্ধসহ তিন জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা শান্তিপাড়ার স্কুলছাত্রী এলিনা আক্তার ইরিনার (১৪) মৃতদেহ পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। হাটকালুগঞ্জের আনোয়ার হোসেন ও সরোজগঞ্জ বোয়ালিয়ার লতিফা খাতুনের মৃতদেহ অবশ্য ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

দাফনের কিছুক্ষণ আগে পুলিশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের শান্তিপাড়াস্থ বাড়ি থেকে স্কুলছাত্রী এলিনা আক্তার ইরিনার লাশ উদ্ধার করে। আজ মঙ্গলবার সদর হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্ত করা হতে পারে। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা হাটকালুগঞ্জের ৬০ বছর বয়সী বৃদ্ধ আনোয়ার হোসেনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়ে হাসপাতাল থেকে দ্রুত লাশ সরিয়ে নেয়া হয়। পরে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়। এদিকে সরোজগঞ্জ বোয়ালিয়ার লতিফা খাতুন (৪২) বিষপানের পর মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গতকাল সোমবার হেরে গেছে। তার মৃতদেহ নিজ গ্রামে নিয়ে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা শান্তিপাড়ার গিয়াস উদ্দীন দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়া প্রবাসী। তার স্ত্রী নুরুন্নাহার দু মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। ছোট মেয়ে এলিনা আক্তার ইরিনা ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী ছিলো। গতকাল সকাল ৮টার দিকে তাকে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপতালে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। দ্রুত লাশ নেয়া নিজ বাড়িতে। ডিস ব্যবসায়ী হামিদুর রহমানসহ কয়েকজন তড়িঘড়ি করে ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া করতে থাকে। বেলা গড়ানোর সাথে সাথে সন্দেহ বাড়তে থাকে। পরিবারের সদস্যরা অবশ্য বলেছে, মায়ের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এর এক পর্যায়ে ঘরে রাখা হয়। ঘরের মধ্যে সে ফ্যানের হুকের সাথে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে জানায়। দুপুরে খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গার সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) সুফী উল্লাহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে শান্তিপাড়ায় হাজির হন। কাফন পরানো অবস্থায় মৃতদেহ দেখে সুরতহাল রিপোর্ট প্রণয়নসহ ময়নাতদন্তের কথা বলেন তিনি। সদর থানার ওসিসহ সঙ্গীয় ফোর্স লাশ উদ্ধার করেন। গতরাতে পুলিশ হেফাজতেই রাখা ছিলো লাশ। আজ ময়নাতদন্ত শেষে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হতে পারে।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, শান্তিপাড়ারই মিনারুল ইসলামের ছেলে জুয়েলের সাথে ইরিনার প্রেমসম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরশু রাতে ইরিনা বাড়ি না ফিরলে সকালে মায়ের সাথে বাগবিতণ্ডা হয়। ইরিনাকে মারধরও করা হয়। ঘরে আটকে রাখার পর সে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা হাটকালুগঞ্জের মৃত প্রেমচাঁদের ছেলে আনোয়ার হোসেনকে (৬০) মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়। বিষপান করেছে বলে জানানো হয়। চিকিৎসা শুরুর কিছুক্ষণের মাথায় মারা যান তিনি। তার লাশ দ্রুত হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নেয়ার ধরন দেখে সন্দেহ ঘণিভূত হয়। বৃদ্ধ বয়সে কেন আত্মহত্যা করেছেন সে প্রশ্নও বড় হয়ে দেখা দেয়। অপরদিকে সরোজগঞ্জ বোয়ালিয়ার শহিদুল ইসলামের স্ত্রী লতিফা খাতুন (৪২) গতপরশু রোববার বিষপান করে। তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়। গতকাল সোমবার মারা যান। মৃতদেহ নেয়া হয় নিজ গ্রামে। ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের প্রক্রিয়া করা হয়।

Leave a comment