স্টাফ রিপোর্টার: ‘মা তুমি আবার এসো’….ভক্ত কণ্ঠের এ আকুতির ভেতর প্রতিমা বিসর্জনে এবারের মতো সম্পন্ন হলো বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচে বড় ধর্মীয় উত্সব শারদীয় দুর্গাপূজা। এবার তিথির ফেরে চারদিনব্যাপি দুর্গোত্সবের শেষ দিনে গত বৃহস্পতিবার মণ্ডপে মণ্ডপে দশমীর বিহিত পূজার মধ্যদিয়ে ঘটে শাস্ত্রীয় সমাপ্তি। গতকাল শুক্রবার হলো দেবীর বিসর্জন আর শান্তিজল গ্রহণ। গত সোমবার বোধনে অরুণ আলোর অঞ্জলি নিয়ে আনন্দময়ী মা উমাদেবীর আগমণ ঘটে মর্ত্যে। হিন্দু বিশ্বাসে টানা চারদিন মৃন্ময়ীরূপে মণ্ডপে মণ্ডপে থেকে ফিরে গেছেন কৈলাসে স্বামী শিবের সান্নিধ্যে। এবার ঘোটকে আসা দেবী ফিরেছেন পালকিতে।
গতকাল চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ সারাদেশে ২৯ হাজারের বেশি মণ্ডপে দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জন হয়। সকাল থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে নামে ভক্তদের ঢল। ঢাক আর শঙ্খধ্বনি। ঢাকের বাদ্য, সিঁদুর খেলা। মুখরিত মণ্ডপ প্রাঙ্গণ। একদিকে বিদায়ের সুর। অন্যদিকে উত্সবের আমেজ। চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ এলাকার মণ্ডপে মণ্ডপে চলে বিষাদে আনন্দে বিদায় উত্সব। চুয়াডাঙ্গার বেশ কয়েকটি মণ্ডপের প্রতিমা বিভিন্ন যানবহনে তুলে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণও করা হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অসুর শক্তি বিনাশকারী দেবী বিদায় নেয়ার সাথে সাথে পৃথিবী থেকে সকল অপশক্তির বিনাশ হয়। সবার অন্তরের কামনা আগামী শরতে আবার বাঙালি হিন্দুর ঘরে ঘরে ফিরে আসবেন মা ‘উমা’। প্রতিমা ঘাটে নিয়ে আসার পর ভক্তকুল শেষবারের মতো ধূপধুনো নিয়ে আরতিতে মেতে ওঠে। শেষে পুরোহিতের মন্ত্রপাঠের মধ্যদিয়ে দেবীকে নৌকায় তুলে বিসর্জন দেয়া হয়। নদীপাড়ে ধর্মীয় রীতি মেনে অপরাজিতা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। শেষে আনা হয় শান্তির জল।
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা, জীবননগর, জামজামি, মুন্সিগঞ্জ, মোমিনপুর, দামুড়হুদা, দর্শনা, মেহেরপুর, মুজিবননগর, গাংনীর প্রতিনিধিরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জনের খবর জানিয়ে বলেছেন, মণ্ডপ থেকে প্রতিমা বের করে শোভযাত্রা সংশ্লিষ্ট সড়কে উৎসবের আমেজ ছড়ায়।