স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা হাটকালুগঞ্জ এলাকায় মোটরযান অভিযান চালিয়ে ১৩ মোটরসাইকেল মালিককে বিভিন্ন অপরাধের জন্য জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক। গতকাল সোমবার বেলা ১২টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা নাফিজ সুলতানা পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত উপরোক্ত দণ্ডাদেশ দেন। সহযোগিতায় ছিলেন চুয়াডাঙ্গা বিআরটিএ পরিদর্শক ফয়েজ আহমেদ, বেঞ্চ সহকারী কামরুজ্জামানসহ চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ।
আদালতসূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলায় নিবন্ধনবিহীন মোটরসাইকেলের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। লক্ষাধিক টাকার সাধের গাড়িটি কিনলেও তার নিবন্ধন করতে অনেকেই নারাজ। অধিকাংশ গাড়ির যেমন নিবন্ধন থাকে না তেমনি চালকেরও ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকে না। ইন্স্যুরেন্স বা ফিটনেস ট্যাক্সের কথা বাদই থাক। পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, অধিকাংশ মোটরসাইকেল নিবন্ধনবিহীন, ইন্স্যুরেন্স ও চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নাই। এজন্য মোটরযান আইন ১৯৮৩ এর ১৩৭ ও ১৩৮ ধারায় ১৩ মোটরসাইকেল মালিককে বিভিন্ন অপরাধে মোট ৪ হাজার ৮শ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা সাথে সাথে আদায়পূর্বক মোটরসাইকেল মালিকদের সতর্ক করে দেয়া হয়। তবে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন না করার একাধিক কারণের মধ্যে উচ্চ রেজিস্ট্রেশন ফিই দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন অনেকেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকে বলেছেন, ১০০-১১০ সিসি বাইকের দাম ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। আর এর রেজিস্ট্রেশন ফি ২২ হাজার টাকা। অর্থাৎ মূল দামের ২৬ শতাংশ। এটা অযোক্তিক ও সামর্থ্যহীন। বিশেষ করে মাঝারি আয়ের লোকদের জন্য। শোরুম থেকে বাইক নিয়ে তাদের বিআরটিএ অফিসে কেউ যদি রেজিস্ট্রেশন করতে চায় তাহলে তাকে বাড়তি সার্ভিস চার্জ হিসেবে দিতে হয় ২-৩ হাজার টাকা। বাংলাদেশে মোটরসাইকেল একটি ক্রমবর্ধমান শিল্প। কিন্তু উচ্চ রেজিস্ট্রেশন ফির বর্ধনশীলতা বাধাগ্রস্ত করছে। তবে সরকার মোটরসাইকেল নিবন্ধনের ফির হার কমালে অনেকেই নিবন্ধন করতে আগ্রহী হতো।
বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ থেকে ২০১৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন হয়েছে ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৩২০টি। এর মধ্যে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ৩৩ হাজার ৩৬৬টি, ১৪ সালে ৯০ হাজার ৬৮৫টি, ১৩ সালে ৮৫ হাজার ৮০৮টি, ১২ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৫৮৮টি, ১১ সালে ১ লাখ ১৪ হাজার ৬১৬টি, ১০ সালে ১ লাখ ৯১১০টি ও ৯ সালে ৬ লাখ ৫০ হাজার ১৪৭টি বাইক রেজিস্ট্রেশন হয়। অর্থাৎ ১২ সালের পর ব্যাপক হারে নিবন্ধন হার কমেছে। অথচ উৎপাদনকারী ও আমদানিকারকদের হিসেবে প্রতি বছর ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ পিস বাইক বিক্রি হয়। বর্তমানে বিআরটিএ রেজিস্ট্রেশন চার্জ ৮০ সিসির জন্য ১৪ হাজার ৪৬৮ টাকা, ১০০ সিসির জন্য ২০ হাজার ২১৮ টাকা, ১৫০ সিসির জন্য ২১ হাজার ৮২৮ টাকা। এর আগে ২০০৯ সালে ছিলো যথাক্রমে ৮০০০, ১২ হাজার ৫০০ ও ১৩ হাজার ৪০০ টাকা। তবে নিবন্ধন সংক্রান্ত বিশেষ অভিযানের কারণে চলতি বছর নিবন্ধন তুলনামূলক বেশি হয়েছে।