স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়ীয়া ইউনিয়নের ভোগাইল-বগাদী গ্রামের মল্লিকপাড়া বানিয়া বটতলায় সরকারি খাস জমি দখল নিয়ে উত্তেজনা প্রশমনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ কামরুল হাসানের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে বিরোধপূর্ণ স্থানে বাঁশের বেড়ার অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে এবং ওই স্থানটিতে সকলের জন্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি এবং স্থিতিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গত ৩-৪দিন আগে আলমডাঙ্গার ভোগাইল বগাদী গ্রামের মল্লিকপাড়ায় সরকারি খাস জমিতে গ্রামের দুটি পক্ষের মধ্যে রাস্তার পাশে নয় শতক জমি নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। আলোচিত জমির মধ্যে তিন শতক জমির ওপর গ্রামের মুসলমান সম্প্রদায়ের যুবকরা সম্প্রতি মক্তব তৈরির উদ্যোগ নেয়। যার অংশ হিসেবে বাঁশের বেড়া ও ঘরের অবকাঠামো তৈরি করে। এতে বেঁকে বসে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা। তাদের দাবি বানিয়া বটতলায় দীর্ঘদিন ধরে তারা ষষ্ঠী পূজা করে আসছেন। গত ৪/৫ বছর আগে বটগাছটি ঝড়ে উপড়ে যাওয়ায় সেখানে বটের চারা লাগিয়ে পূজা করে আসছেন। তাই ওই জমিতে তারা মন্দির নির্মাণ করবেন। এ ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা রবিন হালদার গত শনিবার আলমডাঙ্গা থানায় সাধারণ ডায়রি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ কামরুল হাসান ও আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আতিয়ার রহমান আসমানখালী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মহিউদ্দিনকে সাথে নিয়ে ভোগাইল বগাদী গ্রামে যান। এরপর উভয়পক্ষের সাথে কথা বলে ঘটনার বিস্তারিত শোনেন। উত্তেজনা ঠেকাতে ইউএনও জমি থেকে বাঁশের বেড়া ও অবকাঠামো অপসারণ করতে নির্দেশ দেন। গ্রামবাসীরা বেড়া ও অবকাঠামো অপসারণের পর প্রশাসনিক কর্মকর্তারা গ্রাম ত্যাগ করেন। তবে গ্রাম ছেড়ে যাবার আগে উভয়পক্ষকে ডেকে বলে দেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বিরোধপূর্ণ জমিতে কোনপক্ষই যেনো না যায়।
বড়গাংনী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই রবিউল ইসলাম জানান, অপসারণকৃত বেঁড়া ও বাঁশ গ্রামবাসীরা নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে গেছে। ইউনিয়ন ভুমি সহকারি কর্মকর্তা মহিউদ্দিন জানান, আলোচিত ওই ৯ শতক জমি সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত। বগাদী মৌজার আরএস দাগ নং ১৬৭৪। এর মধ্যে প্রায় ৩ শতক জমি খালি পড়ে আছে এবং বাকিটুকু ঘরবাড়ি রয়েছে।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আতিয়ার রহমান জানান, রবিন হালদারের অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে। তার জমিতে বটগাছ ছিলো। বটগাছটি উপড়ে গেলে ফাঁকা জমিতে পাশ্ববর্তী লোকেরা দখল করার চেষ্টা করে। ঘটনাস্থলে তদন্ত করে জানা গেলো এটি খাস জমি। ইউএনও মহোদয় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। তদন্ত করে সরকারি খাসজমি বলে জানা গেছে। পরবর্তীতে ইউএনও মহোদয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ কামরুল হাসান জানান, সরকারি জমি সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করবো। সমাধান করে দেবো।