কক্সবাজারে দিনে-দুপুরে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে ২ জনকে গুলি করে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার: গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিচয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে দিনে-দুপুরে কক্সবাজার শহরের নির্জন পাহাড়ি এলাকায় দুজনকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার দুপুর ২টার দিকে কক্সবাজার কারাগার সংলগ্ন বাদশাগোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- শহরতলির নতুন পুলিশ লাইন এলাকার পেছনে বসবাসকারী দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়ার বাসিন্দা মৃত বখতিয়ার আহমদের ছেলে নুরুল আলম (৪৫) ও ফকির আহমদ ওরফে ফকির বুইজ্যার ছেলে মোহাম্মদ কালু ওরফে বার্মাইয়া কালু (২২)। পুলিশের দাবি, উখিয়ার খাইরুল আমিন নামের এক ব্যক্তিকে অপহরণের পর মুক্তিপণের ৫ লাখ টাকা ভাগাভাগি নিয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলিবিনিময়ে তারা নিহত হয়েছেন। নিহত দুজনের মধ্যে নুরুল আলমের বিরুদ্ধে ১৭টি ও মোহাম্মদ কালু ওরফে বার্মাইয়া কালুর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আরো দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর সংঘর্ষস্থল থেকে দেশে তৈরি ৩টি এলজি, ৪ রাউন্ড কার্তুজ, ৩ রাউন্ড কার্তুজের খোসা ও ১টি কিরিচ উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। তবে নিহতদের পরিবারের দাবি, ডিবি পরিচয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার দেড় ঘণ্টার মধ্যেই তাদের হত্যা করা হয়েছে।

নিহত নুরুল আলমের বড় ভাই সৈয়দ হোসেন জানান, তার ছোট ভাই নুরুল আলমের ছেলে তাকে ফোন করে জানিয়েছিলো, তার বাবাকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে একদল লোক ধরে নিয়ে গেছে। ওই ঘটনার পর খবর পেয়ে মাত্র দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে হাসপাতালে গিয়ে তার ভাইয়ের লাশ পেয়েছেন বলে জানান তিনি। সৈয়দ হোসেন দাবি করেন, পুলিশই তাদের ক্রসফায়ারে হত্যা করেছে। তবে এ দাবির বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাছাড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের মোবাইলে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, গত ১৩ অক্টোবর নিহত নুরুল আলম ও বার্মাইয়া কালুর নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত উখিয়া উপজেলার খাইরুল আমিন নামের এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে। গত ১৭ অক্টোবর ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ওই ব্যক্তি মুক্ত হয়েছেন। তিনি দাবি করেন, মুক্তিপণের ওই টাকার ভাগাভাগি নিয়ে দু পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়। বখতিয়ার উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ ও রক্তাক্ত অবস্থায় দু জনকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।