আলমডাঙ্গায় বহু প্রতীক্ষিত সোয়াদ শিশুপার্কটি শিশুদের কলতানে মুখরিত হয়ে উঠতে শুরু করেছে

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: ছোট পরিসরে হলেও শেষাবধি আলমডাঙ্গায় সোয়াদ শিশুপার্ক নামে একটি বিনোদন কেন্দ্রের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। আলমডাঙ্গা শহরের পাশ ঘেঁষে বয়ে যাওয়া কুমার নদের তীর ঘেঁষে মনোরম জলজ পরিবেশে আলমডাঙ্গার প্রথম ও একমাত্র শিশু বিনোদন কেন্দ্রটি গড়ে উঠেছে। শিশুসহ সকল বয়সের মানুষের বিনোদন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও নির্মল আনন্দ উপভোগের কেন্দ্র হিসেবে ইতোমধ্যেই স্থানটি চিহ্নিত হয়ে উঠেছে।

বলা হয়ে থাকে- যার শৈশব যতো অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ, বর্ণিল ও ঐশ্বর্যময়, পরিণত বয়সে সে ততোটাই প্রতিভাবান হয়ে থাকে। ছেলেবেলা কিংবা শৈশবের বেড়ানোর ছাপটা বড় বেলাতেও মনে দাগ কেটে থাকে। বিশেষ করে বাবা-মায়ের সাথে দূরের কোনো বন-পাহাড়ে অথবা সমুদ্র দেখার আনন্দময় মুহূর্তগুলো আজীবন শিশুর মনের গভীরে এক অন্যরকম রেখাপাত করে থাকে। দেশে বা দেশের বাইরে যে কোথাও ঘুরে বেড়াতে শিশুদের ভীষণ ভালো লাগে। আর এই ঘুরে বেড়ানোর মাঝে যদি থাকে বিনোদনের অনুষঙ্গ, তখন শিশুরা হয়ে ওঠে আরও উত্ফুল্ল। বিশেষত সেই ভ্রমণের সাথে যদি শিশুরা খেলাধুলাবিষয়ক কোনো ইভেন্ট পেয়ে যায় তবে তো কথাই নেই। এই ঘুরে বেড়ানো অথবা ভ্রমণের সঙ্গী হিসেবে শিশুদের বেছে নেয়াটা দায়িত্বশীল বাবা-মা সব সময়ই করে থাকেন। তাছাড়া শিশুদের বেড়ে ওঠার কথা আনন্দের সাথে, প্রকৃতির সাথে। শুধু কি শিশুদের প্রয়োজন? নাগরিক জীবনের ব্যস্ততা, কোলাহল আর নানাবিধ যন্ত্রণা থেকে একটু অবসরের জন্য মানুষ প্রকৃতির কোলে আশ্রয় নিতে চায়। বর্তমানে শরতের স্বচ্ছ নীল আকাশ, এই ঝুম ঝুম বৃষ্টি, এই উজ্জ্বল রোদ। কাশ ফুলের শাদা গুচ্ছ, শিউলির ঘ্রাণ আর আকাশের শাদা মেঘের ভেলা সব কিছুই যেন মানুষকে প্রকৃতির নিবিড় কোলে আশ্রয় গ্রহণের জন্য প্রলুব্ধ করে।

ভেতরে ভেতরে আলমডাঙ্গার মানুষ হাসফাঁস করলেও এতোদিন কোথাও দু’দণ্ড অবকাশের ব্যবস্থা ছিলো না। আলমডাঙ্গা এতদাঞ্চলের অনেক পুরাতন ও ব্যবসা সফল মফস্বল হলেও পরিতাপের বিষয় যে এখানে বিনোদনের জন্য কিছুই গড়ে ওঠেনি। এক সময় বিনোদনের একমাত্র অবলম্বন ছিলো শহরের সিনেমা হল। এখন সিনেমা হলের সে বিনোদন থেকে ভদ্র পরিবার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আলমডাঙ্গা পৌরসভা ১ম শ্রেণির হলেও নাগরিক সুবিধা ৩য় শ্রেণির। পৌরসভার পক্ষ থেকে কয়েকবার শিশুপার্ক তৈরির চেষ্টা করা হলেও তা বাস্তবের আলো দেখেনি।

শহরের শিশুসহ সকল বয়সীদের বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান কাজী খালেদুর রহমান অরুণ গড়ে তুলেছেন সোয়াদ শিশুপার্কটি। আলমডাঙ্গা শহরের হাউসপুর- আসাননগর গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে কুমার নদের তীরে গড়ে তোলা হয়েছে পার্কটি। ছোট পরিসরে হলেও তার এ উদ্যোগ সাধুবাদের যোগ্য বলে মন্তব্য করছেন দর্শনার্থীরা। এখানে প্রবেশমূল্য ১০ টাকা। ১০ টাকার টিকেট কেটে ভেতরে প্রবেশ করলে ১৪টি ইভেন্ট ফ্রি শিশুদের জন্য।

ঈদের আগে শিশুপার্কটি উদ্বোধন করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই আশেপাশের মানুষ সপরিবারে একটু স্বস্তি ও আনন্দের জন্য ছুটছেন এ পার্কে। অনেকে ছুটির দিনে প্রিয় সন্তানদের নিয়ে ঘুরতে যাচ্ছেন পার্কে। সপরিবারে আপনিও বেড়িয়ে আসুন আলমডাঙ্গার প্রথম ও একমাত্র শিশুপার্কটিতে। আপনিও অনায়াসে হারিয়ে যাবেন আপনার ছেলেবেলায়। ছেলেবেলার স্মৃতিকে চাঙ্গা করে নেয়ার এইতো সুযোগ। ছুটির দিনটিতেই বেরিয়ে পড়ুন আপনার ছোট্ট সোনামণিকে নিয়ে আর তাকে পরিচয় করিয়ে দিন সবুজ প্রকৃতি, ফুল-পাখি ও নদীসহ মজার মজার সব রাইডের সাথে।