আলমডাঙ্গায় এনজিওর কথায় পামচাষ করে বিপাকে চাষিরা

স্টাফ রির্পোটার: চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার জেহালা ইউনিয়নের বড়পুটিমারী গ্রামের কয়েকজন কৃষক গত ৮ বছর আগে রূপালী সমাজ কল্যাণ সংস্থা নামক এনজিও থেকে ১৫০ টাকা দরে পামগাছের চারা কিনে রোপণ করেন। এনজিও কর্মীদের কথা ছিলো গাছ রোপণের ৪ বছর পর ফল ধরবে। গাছের সকল পরিচর্যা ও সার-বিষ সরবরাহ এবং ফল ক্রয় করবে এনজিও। কিন্তু গাছ লাগানোর পর থকে কেউ খোঁজ নেয়নি। পামগাছে ফল ধরলেও বিক্রির জায়গা না পেয়ে রাগে দুঃখে গাছ গেটে ফেলেন অনেকেই। পামচাষ করে সর্বস্বান্ত হয়েছে পুটিমারী গ্রামের কয়েকটি পরিবার।

অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, গত ৮ বছর আগে চুয়াডাঙ্গার নীলমণিগঞ্জ বাজারের রূপালী সমাজ কল্যাণ সংস্থা নামক এনজিওর পরিচালক রফিকুল ইসলাম বকুল আলমডাঙ্গার জেহালা ইউনিয়নের বড়পুটিমারী গ্রামের মৃত তাহেরের ছেলে কৃষক আশরাফুল আলমকে পামগাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করেন। কয়েকদিনের মধ্যে তিনি ১ একর জমির ওপর ৩ শ ৫৬টি পামগাছের চারা রোপণ করেন। প্রতিটি চারা ১৫০ টাকা দরে কেনেন। কথা ছিলো এনজিওর অর্থায়নে গাছের পরিচর্যা ও গাছের ফল ক্রয় করা হবে। কিছুদিনের মাথায় এনজিওর পরিচালক বকুলের কোনো হদিস মেলেনি। কৃষক আশরাফুল নিজ উদ্যোগে গাছের চারা বড় করে তোলেন। ৪ বছর পর গাছে পাম ফল ধরতে শুরু করে। ফল ধরলেও তা পচা রোগে আক্রান্ত হয়। মুন্সিগঞ্জ কুষি অফিসে যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি তিনি। কোনো কৃষি অফিসার তার পাম বাগানে আসেননি বলে অভিযোগ করেন আশরাফুল। দেখতে দেখতে ৮ বছর পার হয়ে গেলেও কথিত এনজিওর কোনো লোক খোঁজ রাখেননি। পামফল ক্রয়ের কথা থাকলেও কেউ ফল ক্রয় করতে আসেননি। এনজিওর পরিচালক বকুলের সাথে যোগাযোগ করেও লাভ হয়নি। তিনি বিভিন্ন ছলচাতুরির আশ্রয় নেন। কোনো ক্রেতা না পাওয়ায় গাছ কেটে জমি ফাঁকা করা হয়েছে। গতকাল সরেজমিনে গেলে এনজিওটির নামে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করেন অনেকেই। এছাড়া একই এনজিও থেকে একই গ্রামের বকুল ১ বিঘা ও মাসুদ ২ বিঘা জমিতে পামগাছ লাগিয়ে বিপাকে পড়েছেন।

অপরদিকে আলমডাঙ্গার কুমারী গ্রামের মৃত সাদেক আলী মালিথার ছেলে আমিরুল ইসলাম জানান, ৮ বছর আগে আলমডাঙ্গার গ্রামীণ বাংলা নামক এনজিও থেকে ১২ বিঘা জমিতে মোট ৪শ ৮০টি পামগাছের চারা রোপণ করি। কথা ছিলো ৪ বছরে চারা প্রতি ৭শ টাকা করে নিয়ে ফল ধরিয়ে দেবে। সেই ফল এনজিওটি ক্রয় করবে। কিন্তু বছর যেতে না যেতে এনজিওটি হাওয়া হয়ে গেছে। পামফল ক্রেতা না পাওয়ায় মাসখানেক আগে ১২ বিঘা জমির পামগাছই কেটে ফেলে সেই জমিতে আমের বাগান করা হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জ কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি অফিসার আব্দুল মান্নান জানান, পামগাছ লাগানোর ব্যাপারে কৃষি অফিস কিছুই জানে না। এ গাছের সাথে কৃষি অফিসের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তাছাড়া আমাদের কাছে কেউ পরামর্শ নিতে আসেননি। আর বাংলাদেশে পামফল প্রক্রিয়াজাত করার কোনো ব্যবস্থা নেই। কেন এবং কাদের পরামর্শে চাষিরা পামগাছ লাগিয়েছেন তা জানি না।

Leave a comment