হাসপাতালে তিন রিপ্রেজেনটেটিভকে শার্ট খুলিয়ে কান ধরিয়ে উঠ-বস

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন অফিসে দালাল ধরতে অভিযান চালিয়েছেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ও বিআরটিএ অফিসে অভিযান চালিয়ে দু দালালকে জরিমানা করা হয়। এ সময় সদর হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির তিন প্রতিনিধিকে জনসম্মুখে শাস্তি দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গায়ের জামা খুলে একে অপরের কান ধরে উঠ-বস করানোর ঘটনাকে বেআইনি বলে দাবি তুলে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ফারিয়া চুয়াডাঙ্গা শাখার আহ্বায়ক নাজমুল হক।

জানা গেছে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুনিবুর রহমান ও মুশফিকুল আলম হালিমের নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমাণ আদালত গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে প্রথমে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে অভিযান চালান। ওই সময় হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ভিজিট নিষিদ্ধ থাকলেও শুকুর আলী, জাইফার ও জহুরুল ইসলাম নামের তিন রিপ্রেজেনটেটিভ কোম্পানির প্রচারের জন্য হাসপাতালে ঢোকেন। আদালত তাদেরকে আটকের পর তাদের শারীরিক শাস্তির আদেশ দেন। শাস্তি হিসেবে হাসপাতাল চত্বরে জনসম্মুখে ওষুধ কোম্পানির তিন প্রতিনিধি তাদের গায়ের শার্ট খুলে তিনজন একে অপরের কান ধরে ১০ বার উঠ-বস করেন। পরে চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত রাজু নামের এক দালালের ৫শ টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা বিআরটিএ অফিসে অভিযান চালিয়ে মঈনুল নামের এক দালালকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

নিষিদ্ধ সময়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের অভ্যন্তরে ওষুধ কোম্পানির তিন প্রতিনিধিকে পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রকাশ্যে কান ধরে উঠ-বসের আদেশ দেয়ার বিষয়টি সমালোচনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। খোঁজ নিতে গেলে একসূত্র বলেছে, ওষুধ কোম্পানির তিন প্রতিনিধি প্রথমে নিজেদের পরিচয় গোপন করে ছাত্র বলে দাবি করে। এক পর্যায়ে তারা স্বীকার করে। মিথ্যা বলার কারণেই ভ্রাম্যমাণ আদালত তাৎক্ষণিক জনসম্মুখে ওই শাস্তি দেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সংগঠন ফারিয়া চুয়াডাঙ্গার আহ্বায়ক নাজমুল হকসহ ৭ জন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আনুমানিক গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার দিকে ওষুধ কোম্পানির কয়েকজন প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রবেশ করেন। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত হাসপাতালে উপস্থিত হন। এ সময় ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সাথে দেখা হয়। তাদেরকে হাসপাতাল চত্বরে এনে জনসম্মুখে মধ্যযুগীয় কায়দায় গায়ের জমা খুলে কান ধরে উঠ-বস করানো হয়। এটা আমাদের কাছে মনে হয়েছে মানবাধিকার লঙ্ঘন। এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুনিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চিকিৎসকদের চেম্বারে ছিলেন কয়েকজন। তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা প্রথমে বলেন রোগী নিয়ে এসেছি। রোগী দেখতে চাইলে ব্যর্থ হন। এরপরই বলেন আমরা ছাত্র। পাশের ছাত্রাবাসে থাকি। এক পর্যায়ে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি বলে জানান। বিশ্বাস করার মতো প্রমাণ উপস্থাপনেও ব্যর্থ হন। একেক সময় একেক রকম পরিচয় দেয়ার কারণেই বিভ্রান্ত হয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।

V adalot

Leave a comment