কিশোর হত্যা : হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কাম্য

কিশোর হত্যা : হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কাম্য

চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার পল্লি কাবিলনগরের কিশোর সলোক হত্যার নেপথ্য উন্মোচিত হয়েছে। সেলফোনে ডেকে নিয়ে অপহরণের ৫ দিনের মাথায় উদ্ধার হয় গলিত লাশ। সরোজগঞ্জ বোয়ালিয়া গ্রামের অদূরবর্তী নবগঙ্গা শ্মশানঘাটের কচুরিপনার নিচ থেকে লাশ উদ্ধারের সময় পরিচয় নিয়ে কিছুটা সন্দেহ দেখা দিলেও ছেলের লাশ মায়ের চিনতে অবশ্য কষ্ট হয়নি। লাশ উদ্ধারের পর পরই ঘাতকচক্রের সদস্য গ্রেফতার এবং গ্রেফতারকৃত একজনের নিকট থেকে স্বীকারোক্তি আদায়। পুলিশের দ্রুত এ পদক্ষেপ প্রশংসার দাবি রাখে।

হত্যার সাথে জড়িতদের একজন স্বীকারোক্তিতে বলেছে, কিশোর সলোকের সৎ চাচার চক্রান্তেই হত্যাকাণ্ড হয়েছে। হত্যার পর লাশ গুমের জন্য নবগঙ্গার পানিতে অপচনীয় সুতোয় ইট বেঁধে ডুবিয়ে দেয়। নবগঙ্গার কচুরিপনার আড়ালে দ্রুতই নিশ্চিহ্ন হতে থাকে কিশোরের মৃতদেহ। বোয়ালিয়া গ্রামের দু যুবক মাছ ধরতে গিয়ে কচুরিপনা সরাতেই চোখে পড়ে লাশ। চমকে ওঠে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। কিশোরের মা শনাক্ত করে বলেন- এই মৃতদেহই ছেলে সলোকের। ঈদে কিনে দেয়া জামা দেখেই মূলত তিনি নিশ্চিত হন। পুলিশের অবশ্য সন্দেহ থেকে যায়। সন্দেহ কাটাতে যেমন ডিএনএ পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়, তেমনই নিখোঁজ নথিটির সূত্র ধরে হত্যা মামলা রুজু করে শুরু হয় তদন্ত। প্রথমেই গ্রেফতার করা হয় গ্রামের কয়েকজন সন্দেহভাজনকে। এদেরই একজন লাল্টু। মধ্যবয়সী। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে কিশোর সলোক হোসেন হত্যার কথা স্বীকার করে গোপন কথা ফাঁস করে দেয়। তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করা হয়েছে। বাড়ির ভিটে নিয়ে সলোকের পিতার সাথে সৎ চাচার বিরোধ। সেই বিরোধের জের ধরেই হত্যাকাণ্ড।

কিশোর সলোক হত্যা ও তার লাশ গুমের ধরন শাদা চোখে দেখে যে কেউই অনুমান করবেন এটা সন্ত্রাসীদেরই কাজ। বাস্তবে উল্টো। পারিবারিক। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড পুলিশের পক্ষে ঠেকানো অনেকটাই অসম্ভব। তবে এ ধরনের অপরাধ প্রবণতা রোধে যে কাজটি পুলিশের দ্রুত করা দরকার, তা এখন পর্যন্ত করছে বলেই প্রতীয়মান। মূলত সে কারণেই সাধুবাদ। হত্যার সাথে জড়িত সকলকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনে সোপর্দ করতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলে এ ধরনের অপরাধ প্রবণতা হ্রাস পাবে।