ঢাকাস্থ দর্শনা পরিবারের প্রাণপুরুষ আব্দুল হামিদ পিন্টু বললেন : প্রজন্ম প্রতিষ্ঠার পথ মসৃণ করার স্বপ্নে বিভোর আমরা

স্টাফ রিপোর্টার: ‘সমিতি? কেমন যেন নিয়মে বাধা গণ্ডি। পরিবার? শব্দটার মধ্যেই আপন-আত্মার বন্ধন। দর্শনার যারা ঢাকায় থাকি, তারা তো একই পরিবারভুক্ত। নয় কি!’ মাথাভাঙ্গার ছোট্ট প্রশ্নে ঢাকাস্থ দর্শনা পরিবারের প্রাণপুরুষ আব্দুল হামিদ পিন্টু এভাবেই বোঝালেন- দর্শনার যারা ঢাকায় থাকেন তারা কতোটা আপন আত্মার বন্ধনে একাট্টা।

এবারের কোরবানির ঈদের পরের দিন দর্শনা কলেজমাঠে দর্শনা পৌরসভা বনাম ঢাকাস্থ দর্শনা পরিবারের মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এ খেলায় যেমন দর্শনা পরিবারের সেক্রেটারি আব্দুল হামিদ পিন্টু নামেন মাঠে, তেমনই দর্শনা পৌরসভার এক সময়ের কৃতী ফুটবলার ইনাও নামেন সাথে উপযুক্ত ছেলেকে নিয়ে। সেখানেই খেলার আগেই মাঠের পাশে দেখা হয়, কথা হয় দর্শনা পরিবারের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ পিন্টুর সাথে। তিনি দর্শনা পুরাতন বাজারের মরহুম আবুল কাশেমের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় থাকেন। একটি বাইং হাউজের মালিক। কেএফএম ফ্যাশন’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সফল ব্যবসায়ী। চোখেমুখে তারুণ্যে ভরপুর। বন্ধুরা তাকে ‘এভার গ্রিন’- চিরসবুজ বলে ঈর্ষার তীর ছোড়েন।

ঢাকাস্থ দর্শনা সমিতি না করে দর্শনা পরিবার করলেন কেন? এ প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়েই মূলত আব্দুল হামিদ পিন্টু দিয়েছিলেন নিয়মে বাধা গণ্ডি আর আপন আত্মার বন্ধনের বর্ণনা। দর্শনা পরিবার নিয়ে কেমন স্বপ্ন দেখেন? সোজাসাপ্টা জবাব, গতানুগতিকতা থেকে বের হতে চাই বলেই ‘দর্শনা পরিবার’ দর্শনার প্রজন্মের সামনে প্রতিষ্ঠার পথ মসৃণ করার স্বপ্ন দেখি। কেমন? যেমন ধরুন- এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক আছেন, আঁকের পণ্ডিত মশাইয়ের বড্ড অভাব। আমরা দর্শনা পরিবার ঢাকা থেকে আঁকের শিক্ষক আনতে চাই। শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, শিক্ষক এবং এলাকার শিক্ষিত উৎসাহী যুবক-যুবতীদের প্রশিক্ষণের মধ্যে আঁকের তথা চিত্রাঙ্কণের পণ্ডিত হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এরাই প্রজন্মকে আঁক শেখাবে। একইভাবে দর্শনায় যেসব ক্ষেত্রে প্রজন্মকে সফল করতে ঘাটতি রয়েছে সেগুলো দর্শনার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পূরণে পদক্ষেপ নেবে দর্শনা পরিবার।

দয়া দাক্ষিণ্য? না, অবশ্যই দর্শনা পরিবার কারো প্রতি দয়া দেখিয়ে অলস বানাতে রাজি নয়। তবে দর্শনার যারা ঢাকায় লেখাপড়া করতে যাবে তাদের পথ দেখানোসহ সময়ের কঠিন স্রোতে টেকার মতো পরিবেশ সৃষ্টিতে সব সময় সিদ্ধহস্ত থাকবে দর্শনা পরিবার। চিকিৎসায় সহযোগিতা? সেটা থাকবে যেমন স্বশরীরে, তেমনই এলাকার কোনো কৃষক তার উৎপাদিত ফসল ঢাকায় নিয়ে যাতে প্রতারিত না হয় সেদিকেও রাখা হবে বিশেষ নজর। আর এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণ, পিছিয়ে পড়া কোনো ব্যক্তিকে রিকশা দিয়ে বা কোনো নারীকে সেলাইমেশিন দিয়ে স্বাবলম্বী করার কর্মসূচি দর্শনা পরিবার হাতে নিলেও সেটা থাকবে মূলত প্রতীকী। যা দেখে এলাকার স্বাবলম্বী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান যাতে উদ্বুদ্ধ হয়, সেটাই করা হবে।

ঢাকাস্থ দর্শনা পরিবারের বর্তমান সদস্য সংখ্যা পাঁচ শতাধিক। এর মধ্যে কৃষি সম্প্রসারণের মহাপরিচালক হামিদুর রহমানও রয়েছেন। তিনিসহ চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগর রয়েছেন উপদেষ্টা পরিষদে। দর্শনা পরিবারের এ পরিষদে রাখা ২২ জনই সৃষ্টিশীলতার তাগিদ দেন হররোজ। বপন করেন স্বপ্নের বীজ। সেই তাগিদ, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাহিনী তথা কার্যনির্বাহী পরিষদে রয়েছেন ৩৩ জন। সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন রফিকুল ইসলাম বাবলু। তিনি অতিরিক্ত সচিব। যে জনপদের কৃতী সন্তানদের কেউ অতিরিক্ত সচিব, কেউ একটি বিভাগের শীর্ষ আধিকারিক, সেই জনপদের প্রজন্মকে সাফল্যের পথ দেখানোর জন্য আপন আত্মার বন্ধনে গড়া দর্শনা পরিবার কতোটা সফল হবে সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।Abdul Hamid pintu