গাংনী প্রতিনিধি: সড়ক দুর্ঘটনায় বড় ভাইয়ের মৃত্যুর ১৯ বছর পর সেই দুর্ঘটনায় কেড়ে নিলো ছোট ভাই মোমিনুল ইসলাম মোমিনের (২৮) প্রাণ। মর্মান্তিক এ ঘটনাটি মেহেরপুর গাংনী উপজেলার গোপালনগর গ্রামের। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মতিঝিল নামক স্থানে দু আলগামনের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হন মোমিন। নিহত মোমিনুল ইসলাম গোপালনগর গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাফের ছেলে।
দৌলতপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বিপ্লব জানান, দৌলতপুর থেকে নিজের আলগামন চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন মোমিনুল ইসলাম মোমিন। দৌলতপুর-কাতলামারী সড়কের মতিঝিল এলাকায় পৌছুলে আরেকটি আলগামনের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে। এতে মাটিতে ছিটকে পড়ে মাথা ও বুকে গুরুতর আঘাত লেগে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন মোমিন। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি কামালপুর পুলিশ ক্যাম্পে জানায়। ঘটনাস্থল থেকে মোমিনের লাশ ও তার আলগামনটি উদ্ধার করা হয়। তার মৃত্যুতে পরিবার ও গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে ঠাণ্ডু মিয়ার আড়ত থেকে ভাড়া হিসেবে পাট বোঝাই করে দৌলতপুরে যান মোমিন। সেখানে একটি দোকানে পাট পৌছে দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজন তার মৃত্যুর খবর পায়। সড়ক দুর্ঘটনা নাকি হত্যাকাণ্ড এ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন খবর পাচ্ছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু পরে পরিবারের লোকজন সেখানে পৌছুলে রহস্যের জট খোলে। দুটি আলগামনের সংঘর্ষে সে নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ। তবে অপর আলগামনচালককে ধরতে পারেনি এলাকাবাসী। রাতেই পরিবারের পক্ষ থেকে অনাপত্তি দিয়ে লাশ নিতে চাইলে সে ব্যবস্থা করে পুলিশ।
দৌলতপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরো জানান, নিহতের পরিবার কোনো মামলা করতে রাজি না হওয়ায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহত মোমিনুল ইসলামের তিন ভাই ও দু বোন। বড় ভাই ১৯ বছর আগে গ্রামের মোড়ে ট্রাক চাপায় নিহত হন। স্ত্রী ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশুপুত্র নিয়ে ছিলো মোমিনের সংসার। আর তাইতো পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তিকে হারিয়ে অথই সাগরে পড়েছেন তার স্ত্রী-সন্তান। অন্যদিকে ছেলেকে হারিয়ে বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন পিতা-মাতা।