চুয়াডাঙ্গার দোস্ত গ্রামে গৃহবধূ শাপলার বিষপানে আত্মহত্যা নাকি হত্যা? স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি বাড়িছাড়া

বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা দোস্ত গ্রামের গৃহবধূ এক সন্তানের জননী শাপলাকে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি মিলে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মারপিটের পর মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালানো হয়েছে বলেও গৃহবধূর পরিবার থেখে অভিযোগ তোলা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে শাপলার স্বামী মিজানুর, শ্বশুর ও শাশুড়ি বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। স্বামী মিজানুরকে প্রধান আসামি করে ৪ জনের বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা করা হয়েছে। গতরাত ১২টার দিকে শাপলার লাশ তার শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালমর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

অভিযোগে জানা গেছে, ৪ বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক করে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের হিজলগাড়ি মাঝপাড়ার জাকির হোসেনের মেয়ে শাপলা খাতুন ও একই ইউনিয়নের দোস্ত গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে মিজানুর রহমান। বিয়ের পর থেকেই শাপলাকে বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য স্বামী মিজানুর, শ্বশুর ইসমাইল ও শাশুড়ি চাপ দিয়ে আসছিলো। আড়াই বছরের মাথায় তাদের কোলজুড়ে জন্ম নেয় একটি পুত্রসন্তান। তারপরও থেমে থাকেনি মিজানুর। যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় প্রায় শাপলাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো বলে শাপলার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। যৌতুকের টাকা আনতে গত কোরবানির ঈদের একদিন পর মিজানুর স্ত্রী শাপলাকে তার পিতার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। হতদরিদ্র ঘরের মেয়ে হওয়ায় শাপলা গত পরশু বৃহস্পতিবার খালিহাতে ফেরে শ্বশুরবাড়ি। গতকাল শুক্রবার সকালের দিকে মিজানুর ও তার পিতা-মাতা সংসারের কাজকামের ছুতো তুলে মারপিট করে। দুপুরের দিকে স্বামী মিজানুর আবারও শাপলাকে মারপিট করে। এক পর্যায়ে শাপলা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লে মুখে বিষ ঢেলে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালানো হয়। শাপলার ওপর নির্যাতনের বিষয়টি প্রতিবেশীরা প্রত্যক্ষ করলেও মিজানুরের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস করেনি। ঘটনার পর থেকে স্বামী মিজানুর, শ্বশুর ইসমাইল ও শাশুড়ি ফুলবানু বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় শাপলার পিতা বেঁচে না থাকায় ছোট চাচা ইমরান বাদী হয়ে মিজানুরকে প্রধান আসামি করে ৪ জনের বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় ৩০৬ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

 

Leave a comment