নির্ধারিত সময়ে পুনর্গঠন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারেনি বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার: নির্ধারিত সময় শেষ হলেও সম্পন্ন হয়নি বিএনপির সাংগঠনিক পুনর্গঠন। দলের চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার একটিতেও কমিটি করতে পারেনি দায়িত্বপ্রাপ্তরা। গত ৯ আগস্ট কেন্দ্রীয় দফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল ৩০ সেপ্টেম্বর ছিলো পুনর্গঠন কার্যক্রম সম্পন্নের শেষ দিন। কিন্তু চলতি সপ্তাহে একেরপর এক সময় বাড়ানোর আবেদন জমা হয়েছে দলের কেন্দ্রীয় দফতরে।

দফতর সূত্র জানিয়েছে, অন্তত ৫০টি জেলা থেকে কমিটি গঠনের সময় বাড়ানোর আবেদন এসেছে। যার মধ্যে ১৫টি জেলা লিখিতভাবে এবং বাকিগুলো মৌখিকভাবে সময় চেয়েছে। লিখিত আবেদনকারী জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা, গাজীপুর, ময়মনসিংহ উত্তর ও দক্ষিণ, নোয়াখালী, ফেনী, সুনামগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর। অন্য ২৫টি জেলার দায়িত্বপ্রাপ্তরা এ ব্যাপারে কোনো যোগাযোগই করেনি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অগ্রগতি না হওয়া জেলাগুলোর মধ্যে অন্তত ১৫টি সাংগঠনিক জেলা কমিটি ভেঙে দেয়ার ব্যাপারে অভিমত দিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। সূত্র বলেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়কের নিকট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন অধিকাংশ যুগ্মআহ্বায়কসহ সদস্যরা। এ পক্ষ ইতঃমধ্যেই আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে নতুন করে কমিটি গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

উল্লেখ্য, দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষে ৯ আগস্ট যুগ্মমহাসচিব মো. শাহজাহানের স্বাক্ষরে পাঠানো পুনর্গঠনের নির্দেশনাযুক্ত চিঠিতে বলা হয়েছিলো, বিগত আন্দোলনে পরীক্ষিত, ত্যাগী ও দক্ষ ব্যক্তিদের নেতৃত্বে আনতে হবে। এছাড়া বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডন যাওয়ার আগে দল পুনর্গঠনের কাজ জোরদার করতে তাগিদ দিয়ে যান। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সম্মেলন করে কমিটি পুনর্গঠনের জন্য বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশনা সম্বলিত চিঠি পাঠানোর দেড় মাসের মাথায় একমাত্র ব্রাক্ষণবাড়িয়া ইতোমধ্যে কাউন্সিল সম্পন্ন করেছে। তবে এখন পর্যন্ত কমিটি হয়নি। অন্যদিকে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, কুমিল্লা দক্ষিণ, পাবনা, মেহেরপুর ও সিলেট জেলার বেশিরভাগ থানা ও ইউনিয়নে কমিটি হয়েছে। তারা এখন জেলা কমিটির সম্মেলন করার পর্যায়ে রয়েছে। কয়েকটি জেলা সম্মেলনের জন্য কেন্দ্রের কাছে দিন-তারিখও চেয়েছে। অন্যদিকে বরিশাল মহানগর ও জেলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পঞ্চগড়, রাজশাহী মহানগর, নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, ঢাকা জেলা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, কুষ্টিয়া, চট্টগ্রাম মহানগর, খুলনা জেলা, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে কমিটি পুনর্গঠনের কোনো কাজই হয়নি। জেলা পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, পুনর্গঠনের জন্য নেতা-কর্মীদের সংগঠিত হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না পুলিশ। সম্মেলনের জন্য মিলনায়তন পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশের হয়রানির পাশাপাশি বাধা হয়ে দাঁড়িযেছে অন্তর্কোন্দল। এমন পরিস্থিতিতে অনেক জেলায় নেতা-কর্মীরা আলোচনা করে কমিটি গঠনে কাজ করছেন। এদিকে বিএনপির কেন্দ্র থেকে দুটি পর্যবেক্ষক টিম কাজ করছে। সে টিম সূত্র জানায়, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি গঠনের কথা থাকলেও চুয়াডাঙ্গাসহ অধিকাংশ এলাকায় পকেট কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে। ত্যাগী ও কারাগারে থাকা নেতাদের মতামতও উপেক্ষা করা হচ্ছে। তাদের কমিটিতে রাখার ব্যাপারেও অনীহা জেলা নেতাদের। বিশেষ করে অনুগত ও আস্থাভাজনদের দিয়ে কমিটি গঠনে বেশ চাপ সৃষ্টি করছে বর্তমান কমিটি।