মাথাভাঙ্গা মনিটর: ঢাকায় ইতালির নাগরিক খুনের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক এবং অবশ্যই খুনিদের খুঁজে বের করে বিচার করা হবে। তবে একে কেন্দ্র করে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া দূতাবাস তাদের নাগরিকদের জন্য যে জরুরি সতর্কবার্তা জারি করেছে তা শুনে আমি বিস্মিত।’ স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘১৬ কোটি মানুষের দেশে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটতেই পারে। অথচ কিছু হলেই বাংলাদেশের দোষ হয়। বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা ও মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। কিন্তু এই নিউইয়র্কে আমাদের প্রিয় আওয়ামী লীগ নেতা নজমুল ইসলামকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল। আজও পর্যন্ত সে খুনের বিচার হয়নি। এর আগে কানেকটিকাটে আওয়ামী লীগ নেতা বেলাল তরফদারকে খুন করা হয়। এ নিয়ে এখানকার মিডিয়া পর্যন্ত তেমন কিছু বলেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্যই ৫ জানুয়ারির নির্বাচন হয়েছিল। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করেই আগামী নির্বাচন হবে। বিএনপি নির্বাচনে না গিয়ে সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়ে ছিল। তারা মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। এভাবে যারা মানুষ পুড়িয়েছে তাদের বিচার হবেই, কেউ রেহাই পাবে না।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট টিম কেন আসছে না তা আমি জানি না। তবে যদি নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে আসতে না চান তবে বলবো, কিছুদিন আগে তো পাকিস্তান ও ইন্ডিয়াসহ বেশ কয়েকটা ক্রিকেট টিম ঘুরে গেল। তাদের তো নিরাপত্তার কোনো সমস্যা হয়নি।’ বাংলাদেশ এখন জঙ্গিমুক্ত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি। বাংলাদেশে সন্ত্রাসীদের কোনো ঠাই নেই। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায়ও বাংলাদেশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। যারা স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছে। তারাই বারবার নিরীহ মানুষ হত্যা করছে। জিয়াউর রহমান খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে ছিলেন। বিদেশে চাকরি দিয়ে তাদের পুরস্কৃত করে ছিলেন।’ ক্তব্যের পাশাপাশি আগাম নির্বাচন, দেশিয় ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা, জঙ্গিবাদ, শান্তিরক্ষী মিশনে সৈন্য প্রেরণ, সাম্প্রদায়িকতা, ব্লগার হত্যাকাণ্ড, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানের বিচারের রায়, জামায়াত নিষিদ্ধ, সম্প্রতি বাংলাদেশে ইতালির নাগরিক হত্যা, দেশের চলমান রাজনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার সরকারের অবস্থান ও কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। পাশাপাশি তিনি তার যুক্তরাষ্ট্র সফরে নানা অর্জন ও সফলতা তুলে ধরেন। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দিপু মনি, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. এ কে আব্দুল মোমেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজবাহ উদ্দিন সিরাজ, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।