মাজেদুল হক মানিক: মেহেরপুর জেলার পশুহাটগুলোতে বিপুল সংখ্যক দেশীয় গরু-ছাগলের আমদানি হচ্ছে। জমে উঠেছে কোরবানির পশু বেচাকেনা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিনই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ী পশু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। গত কয়েক বছরের চেয়ে এবারে পশুর আমদানি যেমনি বেড়েছে তেমনি দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই বলে জানান ক্রেতা-বিক্রেতারা। তবে ভারতীয় গরু আমদানির বিষয়ে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে গরু পালনকারী ও ব্যবসায়ীদের মাঝে।
মেহেরপুর পৌর পশুহাট ও বামন্দী-নিশিপুর পশুহাটে সপ্তাহের দু দিন বসে। হাট দুটিতে এলাকার বিপুল সংখ্যক গরু-ছাগল আমদানি হচ্ছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। এলাকার ব্যবসায়ী ও কোরবানি দিতে ইচ্ছুক ক্রেতাদের পাশাপাশি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীরা ভিড় করছেন পশুহাটে। ২০ হাজার থেকে শুরু করে দেড় লক্ষাধিক টাকার গরু কেনাবেচা হচ্ছে।
গতকাল সোমবার বামন্দী-নিশিপুর পশুহাটে কথা হয় হিন্দা গ্রামের হযরত আলীর সাথে। তার পালিত একটি এঁড়ে গরুর হাকাচ্ছেন ৬০ হাজার টাকা। আনুমানিক চার মণ মাংসের আশা করছেন তিনি। তবে গরুর দাম উঠেছে ৫০ হাজার টাকা। এ দামে বিক্রি করলে তার পোষাবে না তাই বেশি দামের আশায় অপেক্ষা করছেন। একই হাটে আনুমানিক ২৫ কেজি মাংস হওয়ার মতো একটি খাসি ছাগল তুলেছেন তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের ওবাইদুল্লাহ। দাম উঠেছে ১০ হাজার টাকা।
ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, যে পরিমাণ পশু আমদানি হচ্ছে সেই পরিমাণ বেচাকেনা হচ্ছে না। আরো দাম কমার অপেক্ষায় কোরবানি দিতে ইচ্ছুক অনেক ক্রেতা অপেক্ষা করছেন। শনিবার থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপকভাবে গরু-ছাগল নিয়ে যাওয়া শুরু হয়েছে। এতে স্থানীয় বাজারগুলোতে বেচাকেনা বাড়ার আশা করছেন বিক্রেতারা।
গরুর মাংসের দাম বৃদ্ধিতে মেহেরপুর জেলার ইতিহাসে এবারই সর্বোচ্চ সংখ্যক ৩৪ হাজার গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। ভারতীয় গরু আমদানি না হলে দেশে গরুর সঙ্কট সৃষ্টি হবে এমন আশঙ্কা তাড়া করলেও স্থানীয় বাজারের আমদানিতে সে সংশয় দূর হয়েছে। তবে গো-খাদ্যের যে পরিমাণ দাম বৃদ্ধি পেয়েছে সে তুলনায় কম দামে গরু বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানান খামারী ও গরু পালনকারীরা।
হাট ইজারাদার কামাল হোসেন জানান, মেহেরপুরসহ এ অঞ্চলে গরু করিডোর বন্ধ থাকলেও অন্যান্য স্থান দিয়ে ভারত থেকে গরু আমদানি হচ্ছে। তাই কম দামে গরু ক্রয়ের আশায় অনেকেই এখনো অপেক্ষায় রয়েছেন। ফলে হাটগুলোতে আশানুরূপ কেনাবেচা হচ্ছে না। এদিকে হাটে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন ও জালটাকা শনাক্ত করার জন্য মেশিন স্থাপন করা হয়েছে।