বিজিবির স্বাগত নীতি! বিএসএফ’র না : গরুতে গোলকধাঁধায় বিএসএফ-বিজিবি

ষ্টাফ রিপোর্টার: চলতি বছরের ৩ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বাংলাদেশে গরু পাচার বন্ধে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) প্রধান আশিস মিত্রকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপরই গরু নিয়ে সীমান্তে কড়াকড়ি শুরু করে বিএসএফ। বাংলাদেশে গরু আসা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে গরু নিয়ে সীমান্তে বিএসএফ’র কড়া নজরদারির ফলে চুয়াডাঙ্গাসহ পাশের জেলাগুলোর গরুব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে। নিয়ম মেনে গরু আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সীমান্তের দরজা খোলা রাখলেও ভারতের এমন কড়াকড়ির কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সীমান্ত এলাকার গরু ব্যবসায়ীরা জানান, কোরবানির ঈদকে ঘিরে তারা গরু আনার জন্য ভারতের গরু ব্যবসায়ীদের (মহাজন) কাছে ইতোমধ্যে লাখ লাখ টাকা দিয়ে রেখেছেন। ওপারের ব্যবসায়ীরাও চাচ্ছেন গরু বাংলাদেশে পাঠাতে। কিন্তু বিএসএফ’র কড়া নজরদারির কারণে তারা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে গরু পৌঁছাতে পারছেন না। এতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা পুঁজি হারানোর শঙ্কায় আছেন। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বলছে, ভারতীয় গরু আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দরজা খোলা। নিয়ম মেনে ব্যবসায়ীরা গরু আনতে পারবে।

এদিকে কোরবানির ঈদের মাত্র চার দিন আগে দেশের কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আসার খবর পাওয়া গেলেও চুয়াডাঙ্গাসহ এর আশপাশের দুটি জেলার ১৪২ কিলোমিটার সীমান্তের চিত্র একেবারেই উল্টো। এ অঞ্চলে ভারতীয় গরু আসার করিডোর রয়েছে ৫টি। বৈধ-অবৈধ কোনো পথেই এসব করিডোর দিয়ে ভারতীয় গরু, মোষ বাংলাদেশে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আসেনি। বেলা ১০টা থেকে থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।

মাস ছয়েক আগে জেলার দামুড়হুদা উপজেলার মুন্সিপুর সীমান্তের খাল, মেঠোপথ পার করে প্রতিদিন অন্তত হাজারখানেক গরু-মোষ বাংলাদেশে আনা হতো। স্থানীয় শুল্ক অফিসের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের আগস্ট মাসে এ রুট দিয়ে গরু-মোষ মিলিয়ে পশু এসেছে মোট ৭৯টি। আর চলতি সেপ্টেম্বর মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত এসেছে মাত্র ৪০টি। যার অধিকাংশই মোষ। ফলে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সীমান্ত এলাকার গরু ব্যবসায়ীরা অনেকটা বেকার হয়ে পড়েছেন।

সীমান্তে গরু আনার ব্যাপারে বাংলাদেশের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই জানিয়ে ৬ বিজিবির পরিচালক এসএম মনিরুজ্জামান (বিজিবিএম) বলেন, রাজস্ব দেয়া ছাড়া চুয়াডাঙ্গা সীমান্ত এলাকার একটি গরুও বাংলাদেশের অন্য কোনো স্থানে নেয়া সম্ভব নয়। ভারতীয় গরু আনার পদ্ধতিকে অবৈধ বলতে নারাজ বিজিবির এ কর্মকর্তা। তিনি জানান, বৈধ-অবৈধ যেকোনো পথে আনা গরু যেকোনো সময় বাংলাদেশে ঢুকতে দিতে বিজিবি প্রস্তুত আছে। তবে শর্ত হলো- ওই গরু আনতে বাংলাদেশিরা যেতে পারবে না। ভারতীয় রাখাল অথবা ব্যবসায়ী শূন্যরেখা পর্যন্ত পশু পৌঁছে দেয়ার পর বাংলাদেশে প্রতিটি গরুর জন্য ৫শ টাকা রাজস্ব দিতে হবে। এভাবে যতো বেশি সংখ্যক গরু ভারত থেকে ব্যবসায়ীরা আনতে পারবেন কোরবানির ঈদের আগে বাধা দেবে না বিজিবি বরং স্বাগত জানাবে।

Leave a comment