শাবাশ দৈনিক মাথাভাঙ্গা! শাবাশ পুলিশ!! -আলী কদর পলাশ

খবরের নেশা। খবর না পড়ে থাকতে পারি না। ইতিউতি করে খুঁজে ফিরি মন্দের মধ্যে কোনো ভালো খবর। যেমন আজ মনটাই রাতে বেশ ভালো হয়ে গেলো একটি খবর পড়ে- ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল অতুল খারে।’ ২১ আগস্ট জাতিসংঘ সম্মেলনের ঠিক আগে এমন একটি খবর হৃদয়কে আলোড়িত করে বৈকি! এটি পড়া শেষ করতেই দৈনিক কালের কণ্ঠের একটি খবর- ‘মনকে এভারেস্টের উচ্চতায় নিয়ে গেলো’ ‘মানুষের জীবন বাঁচাতে ২০ ফুট উঁচু ব্রিজ থেকে ঝাঁপ পুলিশের’ -শাবাশ পুলিশ! শাবাশ পুলিশবাহিনী!!

পুলিশ বাহিনীর সফলতার কথা পড়তে পড়তেই হারিয়ে গেলাম স্মৃতির অতলান্তে। মণিকোঠায় আমার প্রিয় পত্রিকা-প্রিয় জেলা। তাইতো দৈনিক মাথাভাঙ্গাও তো পুলিশের সমালোচনা করে, কর্তব্যে গাফিলতি, অতি সক্রিয়তা, ঘুষ খেয়ে দুর্নাম এসব খবর তো ছাপেই- পাশাপাশি পুলিশের সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করতে তো কখনো কুণ্ঠবোধ করে না। আর করে না বলেই সরদার আল আমিনের একান্তই ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় এটি আজো সগৌরবে টিকে আছে। আর আমরা যারা সৃষ্টির সাথে জড়িত। তারা গৌরবের তিলকটা নেই। তিলকের আঠা তোলার কষ্টের ধারে কাছেও যাই না।

আসলে বলতে চাচ্ছি। দৈনিক মাথাভাঙ্গা সৃষ্টির পেছনে রয়েছে, গণমানুষের মতো অনেক পুলিশের সাহসী ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ভূমিকা। না হলে তৎকালীন একজন পুলিশ সুপার আব্দুর রহমান পিপিএম’র (অতিরিক্ত এডিশনাল আইজি হিসেবে অবসরে, যিনি শুধু পার্বত্য অঞ্চলের শান্তিবাহিনীর আত্মসমর্পণের একজন অন্যতম নিষ্ঠাবান কর্মীই ছিলেন না, ছিলেন যশোর, মাগুরা, নড়াইল, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর অঞ্চলের কথিত বিপ্লবীদের আত্মসমর্পণের অন্যতম কর্মী) নির্দেশে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি ওয়াহেদুজ্জামান তুষার তদন্ত রিপোর্টটি যেভাবে লিখলেন তা কোনোদিন কেউ লিখলে ইতিহাস হয়ে রবে। শ্রদ্ধা তৎকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ডিসি) তাজুল ইসলাম, অ্যাড. মনিরুজ্জামান এবং সবার হৃদয়ের মানুষ সাইফুল ইসলাম পিনু।

আসলে আজ যেটা লেখার চেষ্টা করছি। দৈনিক মাথাভাঙ্গা এবং পুলিশের অন্দরবাহির। এরপর চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার হয়ে এলেন জাহাঙ্গীর হোসেন পিপিএম, আব্দুর রহিম বিপিএম। এই বিপিএম পদক পাওয়া পুলিশ অফিসারের একটি কথা আমার আজো মনে পড়ে। সিনেমা, উপন্যাস কিম্বা গল্পে কিন্তু পুলিশই নায়ক হয়। তাদের সাথে সারাদিন ছুটে বেড়াতেন আল আমিনের সঙ্গী রিচার্ড রহমান, রাজিব আহমেদ, জাহিদুল ইসলাম, আহাদ আলী মোল্লা, শাহ আলম সনি আর সিনিয়রদের মধ্যে মানিক আকবরসহ অন্যরা।

গত ঈদ গ্রামে মানে চুয়াডাঙ্গা আর মাথাভাঙ্গার সাথে করেছিলাম। আল-আমিনের কাছেই জানলাম। সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলোতে তার বেড়ে ওঠার দুঃসহ যন্ত্রণার কথা। গা ছমছমে সেই গল্প সুযোগ পেলে লিখবো। আবির হাসান আর পুলিশের বন্দুকযুদ্ধ- মাঝখানে ‘মাথাভাঙ্গা’।

সেও তো ছিলো ভালো। এখন শুনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের কোন্দলের রোষানলে পড়েছে। আমি একজন সিনিয়র সাংবাদিক হিসেবে বলতে চাই, ‘দৈনিক মাথাভাঙ্গা’ আছে বলেই এখন আপনাদের খবরগুলো গোটা জেলার মানুষ পড়ছে। শুধু তাই নয়, এখন সেটি বিশ্ব পাঠকের কাছে। যেমন আমি ঢাকা থেকেও প্রিয় জেলার প্রতিটি মুহূর্তের খবর জানতে অনলাইনে ‘দৈনিক মাথাভাঙ্গা’ ক্লিক করি। অন্যদের খবরে যে আমার আস্থা কম। কম্পিউটার অপারেটর, ফেনসিডিল বিক্রেতা, পত্রিকা হকাররা যদি পত্রিকা পরিচালনা করেন। কীভাবে বিশ্বাস করবো? তাই আমার ভরসা। ভরসাস্থলেই।

নোট: ‘মানুষের জীবন বাঁচাতে ২০ ফুট উঁচু ব্রিজ থেকে ঝাঁপ পুলিশের’ শেষে এসে খবরটি বুঝলাম আমার দেশের নয়। আমিতো চাচ্ছিলাম। খবরটি দেশের হোক। চুয়াডাঙ্গার হোক। দৈনিক মাথাভাঙ্গা আবার লিখুক। শাবাশ পুলিশ।

সর্বশেষ: আমি ভি.জে স্কুলের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’র মতো করে শুনবো। (আসলে আমি পঙ্গু ছিলাম বলে আমাকে কোনোদিন অ্যাসেম্বিলিতে দাঁড় করানো হয়নি। আমি সিঁড়িতে দাঁড়িয়েই শুনতাম)।