দেশব্যাপি শোভাযাত্রা, সেমিনারসহ নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে এবারও পালিত হলো আয়কর দিবস। গতকাল থেকে শুরু হয়েছে চুয়াডাঙ্গাসহ সারাদেশে আয়কর মেলা। ঢাকাসহ সব বিভাগীয় শহরে সাত দিন ও চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে চার দিন মেলা চলবে। এবারই প্রথমবারের মতো ২৯ উপজেলায় দু দিন ও ৫৭ উপজেলায় এক দিনের আয়কর মেলা বসবে। এর মধ্যে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জও রয়েছে।
সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন- আয়কর মেলা কী, কী হয় এ মেলায়? ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর আয়কর দিবস পালিত হয়ে আসছে। এ দিবস উপলক্ষে আয়োজন করা হয় মেলা। এ মেলার মাধ্যমে আয়কর প্রদানে উৎসাহিত করার জন্য সর্বোচ্চসংখ্যক করদাতাকে সেবা দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়। এবারও নিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এরই ধারাবাহিকতায় মেলায় উৎসাহী আয়করদাতাদের আগমন ঘটে। আগ্রহের সাথেই আয়কর দেয়ার পরিবেশ সৃষ্টিই মূলত মেলা আয়োজনের মূল কারণ। যেহেতু মেলার আয়োজনের লক্ষ্য হলো- আরো বেশি সংখ্যক মানুষকে কর প্রদানে উৎসাহিত করা। সেই উদ্দেশ্য কতোটা সফল হবে- এমন প্রশ্ন করার সময় যদিও এখনো আসেনি। তবে প্রতিবছরই আয়কর মেলায় আয়করদাতাদের ভিড় বাড়ছে। এরপরও ধারণা করা হয়, কর প্রদানে সক্ষম ব্যক্তিদের একটি বড় অংশই এখনো কর দিচ্ছে না। এখনো অনেক ব্যবসায়ী কর ফাঁকি দেয়াটাকে অপরাধ বলে মনে করেন না। এজন্য ব্যক্তি বিশেষ যেমন দায়ী, একইভাবে এনবিআরও দায় এড়াতে পারে না। কর না দিয়ে রাষ্ট্রের কাছে সেবা ও অবকাঠামোসহ ষোল আনা সুযোগ-সুবিধা দাবি করা যায় কি? চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ সারাদেশেই এমন অনেকে আছেন, যাদের আয় করযোগ্য কিন্তু তারা আয়কর দেন না। কেন? এনবিআর তাদের করের আওতায় আনতে পারছে না? কিছু কারণ তো রয়েছেই।
আয়কর নিয়ে বহু মানুষের মধ্যেই ভীতি কাজ করে। এই ভীতি কাটাতে হবে। জটিলতা দূর করার পাশাপাশি আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সেবার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। অন্যথায় ‘সুখি স্বদেশ গড়তে ভাই, আয়করের বিকল্প নাই’ জাতীয় প্রতিপাদ্য কিংবা ‘সমৃদ্ধির সোনালী দিন, আনতে হলে আয়কর দিন’ জাতীয় স্লোগান কেবল একটি দিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়বে।