স্টাফ রিপোর্টার: সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সৈয়দ মহসিন আলী আর নেই। স্ত্রী ও তিন কন্যাসহ হাজারো ভক্ত, অনুরাগী, শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় গতকাল সোমবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা ৫৯ মিনিটে সৈয়দ মহসিন আলী ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহে…রাজেউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬৭ বছর। তার মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এছাড়া সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে একটি শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
মরহুম সৈয়দ মহসিন আলীর পারিবারিক সূত্র জানায়, আজ মঙ্গলবার রাতে লাশ দেশে পৌঁছুবে। আগামীকাল বুধবার মৌলভীবাজারে জানাজা শেষে সৈয়দ শাহ মোস্তফা (রহ.) মাজার শরিফ প্রাঙ্গণ কবরস্থানে সৈয়দ মহসিন আলীকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে। নিউমোনিয়া ও কিডনি সমস্যাসহ নানা জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে ৩ সেপ্টেম্বর ভোরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীকে বারডেম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিত্সা চলাকালে ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে হৃদরোগে আক্রান্ত হন মন্ত্রী। এরপর থেকে তাকে কৃত্রিমভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস (মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশন) দেয়া হচ্ছিলো। উন্নত চিকিত্সার জন্য ৫ সেপ্টেম্বর মহসিন আলীকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয় এবং সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছোট মেয়ে সৈয়দা সাবরিনা শারমীন এবং স্ত্রী সৈয়দা সায়রা মহসিনও তার সাথে যান। এর আগে একবার বাইপাস সার্জারি করা হয়েছিলো মহসিন আলীর। দীর্ঘদিন যাবত তিনি ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। সৈয়দ মহসিন আলীর মৃত্যুর খবর জানার পর রাজনৈতিক নেতাকর্মী, সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাসহ শুভানুধ্যায়ীরা মহসিন আলীর বাসভবনে ভিড় জমান।
সৈয়দ মহসিন আলী মৌলভীবাজার-৩ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন। ১৯৪৮ সালের ১২ ডিসেম্বর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সৈয়দ আশরাফ আলী এবং মা আছকিরুন্নেছা খানম। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি আইন পেশার সাথে জড়িত ছিলেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১২ জানুয়ারি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।