সকল ধকল সয়ে স্বনির্ভরতার পথেই হাঁটতে হবে

 

শুধু গো-মাংসই নয়, যেকোনো খাদ্যদ্রব্যের ঘাটতি পূরণে স্বনির্ভরতা অর্জন করতে না পারলে পরনির্ভরতা অনিবার্য হয়ে ওঠে। অবশ্য সচেতনতা বাড়লে কৃচ্ছ্র সাধনে পরনির্ভরতা ছাড়াই কিছুদিন পার করা যায়। কৃচ্ছ্র সাধনের পাশাপাশি অভাব ঘোচানোর মতো বাস্তবমুখি পদক্ষেপ নিতে পারলে স্বনির্ভরতা অর্জন অবশ্যই অসম্ভব নয়। অর্জনের পথে কিছু আবর্জনা তো থাকেই। তা সরাতে পারলেই মেলে মসৃণ পথ।

অভাব ঘোচানোর জন্য চোরাই পথে কখনোই সমাধান হয়নি, হতে পারে না। একইভাবে চোরাচালান রেখে দেশের স্বনির্ভরতা অর্জনও সর্বক্ষেত্রে সম্ভব হয়নি, হয় না। ক’দিন পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানি। দেশে ৫০ লাখেরও বেশি গরু-ছাগল কোরবানি করা হয়ে থাকে বলে সরকারি পশুসম্পদ বিভাগেরই পরিসংখ্যান। যা দেশে উৎপাদিত গরু দিয়ে মেটানো অসম্ভব প্রায়। ফলে কিছু গরু পড়শি দেশ মিয়ানমার থেকে আমদানি করা হলেও তা চাহিদার কাছে অপ্রতুল। কারণ দীর্ঘদিন ধরেই দেশে চাহিদার সিংহভাগই মিটিয়ে থাকে অপর পড়শি দেশ ভারত। এবারের কোরবানি সামনে করে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে গরু আসছে না। দীর্ঘদিন ধরে যারা পাচার করে থাকেন তারা পাচারের জন্য সীমান্তে প্রচুর গরু জড়ো করলেও পাচারের সুযোগ পাচ্ছে না। সূত্রমতে, রাজনৈতিকভাবেই ওরা পাচার হতে দিচ্ছে না। ভারতে গরু উদ্বৃত্ত হলেও অবৈধ পথে পাচার করে আনতে হয়, বৈধভাবে কেন গরু রপ্তানি করে না? প্রশ্নটা ছোটো হলেও জবাব অনেক বড়। সুপ্তভাবে হলেও আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে ধর্মীয় অনুভূতি। সে কারণেই বৈধভাবে দুরস্ত, ভারতের বর্তমান সরকার চোরাচালান পথেও গরু রপ্তানিতে নূন্যতম আগ্রহী নয়।

গরু ভারত থেকে রপ্তানি করা না হলে দেশের ছোটো বড় খামারীরা লাভবান হবেন। এবারের লাভে অবশ্যই আগামীতে গরু পালনে আগ্রহী হয়ে উঠবেন। তাতে দেশ গোমাংসে স্বনির্ভরতা অর্জনের পথেই এগুবে। তা কি হতে দেবে? গরুব্যবসায়ীদের মধ্যে যেমন শঙ্কা পিছু ছাড়ছে না, তেমনই খামারীদের মধ্যেও বিরাজমান অনিশ্চয়তা। এটা কাটাতে সঙ্কটের সাময়িক সকল ধকল সয়ে স্বনির্ভরতার পথেই হাঁটতে হবে।