আন্দুলবাড়িয়ায় সহপাঠীকে নিবৃত্ত করতে না পেরে স্কুলছাত্রীকে বাল্যবিয়ে : থামেনি উত্ত্যক্ত!
আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: গভীর রাতে প্রাক্তন প্রেমিকার ঘরে ঢুকে নির্মম পিটুনির শিকার হয়েছে শাওন। সে জীবননগর উথলী ইউপির ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার কাশিপুরের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। সে গত শুক্রবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে একই গ্রামের সহপাঠী প্রেমিকার ঘরে ঢুকে ধরা পড়ে। প্রেমিকা শারমিন আক্তারের স্বামী আজাদকে হত্যার অপচেষ্টা চালিয়ে তাকে অপহরণেরও চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ।
শাওনকে রাতভর পিটুনি দেয়া হয়। রাতে খবর পেয়ে পুলিশ উদ্ধার করতে গেলে বাধার মুখে পড়ে। সকালে পুলিশ শাওনকে উদ্ধার করে প্রথমে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে। শাওনের পিতা বাদী হয়ে জীবননগর থানায় ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ১৩/১৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পক্ষান্তরে পরস্ত্রীর ঘরে ঢুকে হত্যা ও পরস্ত্রীকে অপহরণের অভিযোগে গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবে আজাদের এক চাচাশ্বশুর বলেছেন, পুলিশ পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। আমাদের মামলা না নিয়ে এক পক্ষের মামলা নিয়ে গ্রামে যাকে তাকে গ্রেফতার করতে শুরু করেছে। ফলে আমরা আদালতের আশ্রয় নিতে যাচ্ছি।
কাশিপুর গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, স্কুলছাত্রী শারমিন আক্তার ও শাওন কাশিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে প্রেম সম্পর্ক গড়ে উঠেছে জানার পর শারমিনের পিতাপক্ষ শাওনকে অপ্রাপ্ত বয়সে শারমিনকে উত্ত্যক্ত করতে বারণ করে। তাতে সাড়া না মেলায় অপ্রাপ্ত বয়সেই শারমিনকে বিয়ের আসনে বসান। গত ঈদের কয়েকদিনের মাথায় বিয়ে দেয়া হয়। গত শুক্রবার রাতে শারমিন ও তার স্বামী আজাদ ঘরে ছিলো। কৌশলে ঘরে ঢোকে শাওন। সহযোগিতায় ছিলো কয়েকজন। আজাদকে হত্যার চেষ্টা চালানোর পাশাপাশি শারমিনকে অপহরণের অপচেষ্টা চালানোর সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে শাওন। সহযোগীরা পালিয়ে যায়। তাকে রাতভর পিটুনি দেয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছুলেও শারমিনের নিকটজনেরা শাওনকে পুলিশের হাতে না দিয়ে জানান, সকালে দেয়া হবে। সকালে পুলিশ গেলে পুলিশের হাতে শাওনকে তুলে দেয়া হয়। পুলিশ অবশ্য বলেছে, রাতে উদ্ধার করতে না পেরে সকালে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারের পর পুলিশের কাছে শাওন বলেছে, মোবাইলফোনে তাকে ডেকে নিয়ে আটকে রাতভর নির্যাতন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমাযুন কবীরের সাথে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ করেন সেকেন্ড অফিসার এসআই লুৎফুল কবীর। তিনি বলেন, শাওনের পিতা আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে ১৪ জনসহ আরো ১২/১৩ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে কিশোর নির্যাতনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো আজিজুল ইসলামের ছেলে অভিযুক্ত সোহেল রানা, সোহেল রানার মা আনজিরা ও সোবহানের ছেলে মহিদুল ইসলাম। আজ রোববার গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হবে। অপরদিকে হত্যা চেষ্টা ও নববধূকে অপহরণ করার অপচেষ্টার অভিযোগ তুলে আদালতে পাল্টা মামলা দায়ের করার যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে- শারমীন আকতারের চাচা ইসরাইল হোসেন এ প্রতিবেদককে জানান।