মূল্যবান যা ছিলো সবই হারিয়েছি : আয়লানের হতভাগ্য বাবা

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: আমি এখন কিছুই চাই না। আমাকে পৃথিবীর সব দেশ এনে দিলেও আমার তার প্রয়োজন নেই। মূল্যবান যা কিছু ছিলো সবই হারিয়ে ফেলছি আমি।- কথাগুলো বলেছেন তুরস্কের অন্যতম অবকাশ যাপন কেন্দ্র বোদরামের সৈকতে ভেসে ওঠা তিন বছর বয়সী সিরিয় শিশু আয়লানের পিতা আব্দুল্লাহ কুরদি। জানা গেছে সন্তানদের লাশ নিয়ে শুক্রবার কোবানি ফিরে যাচ্ছেন এই হতভাগ্য বাবা। অনেক স্বপ্ন নিয়ে দু সন্তান আয়লান ও গালিব এবং স্ত্রীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে সমুদ্রপথে ইউরোপের উদ্দেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন সিরিয়ার আব্দুল্লাহ কুর্দি। গ্রিসের কস দ্বীপ ছাড়ার একটু পরেই বড় একটি ঢেউ আছড়ে পড়ে তাদের বহনকারী নৌকাটির ওপর। যাত্রীদের কারও কথা না ভেবেই নৌকা থেকে নেমে সাঁতরাতে থাকেন মাঝি। এ সময় প্রাণপণে স্ত্রী ও সন্তানদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু পারেননি। মরিয়া হয়ে একসময় তিনি নিজেই নৌকাটি চালানোর চেষ্টা করেন। আর তখনই আছড়ে পড়ে আরেকটি ঢেউ। ততোক্ষণে সব শেষ। নিজে কোনোমতে প্রাণে বাঁচলেও একে একে সাগরে ভেসে যায় তার স্ত্রী ও দু ছেলে। দু ছেলের মধ্যে ছোট ছেলে আয়লানের নিথর দেহ গত বুধবার পাওয়া গেছে সাগরতীরে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া তার ওই ছবিতে দেখা গেছে, তুরস্কের অন্যতম অবকাশ যাপন কেন্দ্র বোদরামের সৈকতে মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে আয়লান। পরনে শখের লাল টি-শার্ট আর নীল প্যান্ট। ছবিটি কাঁদিয়েছে গোটা বিশ্বকে। পাশাপাশি সমালোচনার ঝড় বইছে ইউরোপের অভিবাসন নীতি নিয়ে। জন্মভূমি সিরিয়ার কোবানিতে ছেলে ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের লাশ দাফন করতে আব্দুল্লাহ কুর্দি শুক্রবার তুরস্কের সীমান্তবর্তী শহর সুরুকে এসে পৌঁছান। এরপর তিনি তার সন্তান ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের লাশ নিয়ে কোবানির দিকে যাত্রা করেন। তার সাথে পরিবারের অন্য সদস্যরা ও তুরস্কের নিরাপত্তা বাহিনী রয়েছে। তবে কোবানিতে ঢোকার আগেই তাদের দীর্ঘ গাড়িবহর থামিয়ে দেয়া হয়।