দেশীয় উৎস থেকেই পূরণ হবে কোরবানির গরুর চাহিদা

 

স্টাফ রিপোর্টার: দেশীয় উৎস থেকেই কোরবানির গরুর পুরো চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়াধীন প্রাণিসম্পদ অধিদফতর গতকাল শুক্রবার এ তথ্য দিয়ে বলেছে, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশে প্রায় ৩০ লাখ গরু-মহিষ এবং ৬৯ লাখ ছাগল-ভেড়া কোরবানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এ কোরবানিতে ব্যবহৃত পশুর সবটাই দেশীয় উৎস থেকে পাওয়া যাবে। ফলে কোরবানির গরুর চাহিদা পূরণে কোনো সমস্যা হবে না।

অধিদফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, এবারের ঈদে গরু হৃষ্টপুষ্টকরণ কার্যক্রমের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অধিদফতরের পক্ষ থেকে কোরবানির পশুর হাটগুলোতে সুস্থ, সবল ও হৃষ্টপুষ্ট পশুর সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ব্যাপকভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি এলাকার গরু হৃষ্টপুষ্টকরণকারী খামারিদের ইউনিয়নভিত্তিক নাম-ঠিকানা সংবলিত তথ্যাদি সংরক্ষণ করা হয়েছে। ওই সব খামারিকে নিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে গরু হৃষ্টপুষ্টকরণ বিষয়ে এবং নিষিদ্ধ ওষুধ, হরমোন স্টেরয়েড ব্যবহারের কুফলাদি সম্পর্কে অবহিত করতে সভা করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে নিরাপদ গোমাংস উৎপাদন বৃদ্ধির স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতি প্রয়োগ বিষয়ে খামারি পর্যায়ে শিক্ষাদান কার্যক্রম দেশব্যাপী চলমান আছে। গ্রাম-ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাণিসম্পদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও মাঠকর্মীরা নিয়মিত মনিটরিং করছেন।

ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক প্রচার মাধ্যমে নিষিদ্ধ পশুখাদ্য ও নিরাপদ গোমাংস সম্পর্কে বিজ্ঞাপন, স্ক্রলিং, স্লাইড প্রদর্শনীর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একই সাথে নিষিদ্ধ ওষুধ স্টেরয়েড হরমোন ও ভেজাল দ্রব্যাদি মিশ্রণের মাধ্যমে গরু মোটাতাজাকরণ প্রতিরোধেও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ লক্ষে স্থানীয় সব প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মকর্তাদের বিশেষ নজরদারি বজায় রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিষয়টি সরাসরি মনিটরিং করছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। এ বিষয়ে অধিকতর কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া কোরবানির হাটে প্রাণী স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে ভেটেরিনারি টিম গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রতিদিন কোরবানির হাটে ওই ভেটেরিনারি টিম প্রাণীর সেবা প্রদান করবে। তাদের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে সিটি কর্পোরেশন ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতি সহযোগিতা দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া নিরপাদ গোমাংসের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণের কার্যক্রম চলছে। ইতোমধ্যে বিফ ক্যাটল ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প, ব্রিড আপগ্রেডেশন থ্র প্রজেনি টেস্ট, বাফেলো ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টসহ বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এসব প্রকল্প দেশের গোমাংসের উৎপাদন বাড়াতে সক্ষম হবে। এমনকি আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতি অনুসরণ করে গবাদিপশু লালন-পালনের মাধ্যমে দেশে এর উৎপাদন বহুমাত্রায় বৃদ্ধি করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে মাংস রফতানি করা সম্ভব হবে।