মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টিমের কাছে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বর্ণনা দিলেন নিহত ও আহত ৫ পরিবারের সদস্যরা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ভৈরবার কসাইখানা নামে পরিচিত জননী ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে নিহত ৫ গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টিমের কাছে একে একে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বর্ণনা দিলেন নিহত ও আহত ৫ পরিবারের সদস্যরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত নিহত ও আহত পরিবারের সদস্যদের সাথে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টিমের কর্মকর্তারা মৃত্যুর বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন।

পরিবারের সদস্যরা ক্লিনিক মালিক খোকন ও সংশ্লিষ্ট ডাক্তারকেই দোষারোপ করলেন। কিন্তু তারপরও তদন্ত টিমের কর্মকর্তারা ডাক্তারদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন বলেন জানান, নিহত সালেহার বেগমের পিতা আলী মোহাম্মদ। ঢাকায় চিকিৎসাধীন জেনমিন খাতুনের ভাই আলাউদ্দীন তার বোনের বর্ণনা দিতে গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তদন্ত টিমের সামনে কেঁদে ফেললেন। কিন্তু তারপরও তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে নিহত ও আহত রোগীর স্বজনরা ন্যায়বিচার পাবেন কি?

তদন্ত টিমের প্রধান ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. আব্দুস সালাম সাংবাদিকদের জানান, মহেশপুর উপজেলায় ১৩টি ক্লিনিকের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ভুল অপারেশনে রোগীর মৃত্যুর কারণে ভৈরবা জননী ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোম ও খালিশপুরের লালন শাহ ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু সাংবাদিকরা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে মহেশপুরে অবৈধ ২৪টি ক্লিনিকের কথা বললে তদন্ত কর্মকর্তা সিভিল সার্জন ডা. আব্দুস সালাম বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে জানান, আমাদের কাছে অবৈধ কোনো ক্লিনিকের তালিকা নেই। তদন্ত টিমে ছিলেন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. এমদাদুল হক ও সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. জাহিদুর রহমান। পরে তদন্ত টিমের কর্মকর্তারা নিহত ও আহতদের বাড়ি বাড়ি যান। এদিকে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় মহেশপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, জননী ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোম নামের মৃত্যুপুরীতে ভুল সিজার অপারেশনে মৃত্যু হয়েছে গত ২৭ আগস্ট খুলনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামের নাজমুল ইসলামের স্ত্রী বীথি খাতুন (১৮), ভুল সিজার অপারেশনের করুণ মৃত্যু হয় অনন্তপুর গ্রামের আব্দুস সামাদের স্ত্রী আরিফা খাতুনের (১৮)। এর এক সপ্তা পূর্বে জীবননগর উপজেলার বারান্দি গ্রামের ইউসুফ আলীর স্ত্রী সালেহার বেগম (২৬), সিজার অপারেশনের সময় মৃত্যু হয় জাগুসা গ্রামের আক্তার আলীর স্ত্রী রুপা খাতুনসহ (২০) ৫ জন। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে ভুল অ্যাপেন্টিসাইড অপারেশনের শিকার আরো ১১ জন।