পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি অবকাঠামো লিজ এবং

 

‌বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক সময় জৌলুস ছিলো। সরকারের এ জৌলুস হারানো বিভাগের পদস্থ থেকে মাঠপর্যায়ে কর্মরতদের অধিকাংশের বিরুদ্ধেই রয়েছে নানা অভিযোগ। অনিয়মের কারণেই অবকাঠামো বিলিন হচ্ছে, বেদখল হচ্ছে স্থাবর সম্পদ সম্পত্তি। এরই মাঝে একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে পদস্থ কর্মকর্তারা খানেকটা ঘটা করেই গত রোববার সরেজমিন তদন্ত করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আলামডাঙ্গা অঞ্চল সরেজমিন তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে কি-না তা নিশ্চিত করে জানা না গেলেও পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তদন্তকর্তা অবস্থা দৃষ্টে প্রকাশ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

পুকুর চুরি কতো প্রকার ও কি কি? বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু প্রকল্প পরিদর্শন করলে তা আর খুলে বলতে হয় না। গঙ্গা-কপোতাক্ষ তথা জিকে সেচ প্রকল্পটির কথাই যদি বলা যায়, তা হলে যে চিত্র ফুটে ওঠে তা চমকে ওঠার মতোই। খাল সংস্কারের জন্য এতোদিনে যে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা যোগ করলে মাথা ঘুরে উঠবে। ওই অর্থ যদি সঠিকভাবে কাজে লাগানো যেতো তা হলে খাল শুধু সেচ কাজে ব্যবহারের পূর্ণাঙ্গ উপযোগীই থাকতো না, দর্শনীয় স্থানে রূপান্তর হতো। ঘাস কেটেই বহু গম হজম হয়েছে খাল পুনঃখননের নামে। ওসব তো খাল খনন প্রকল্প। খালের কিছু ঝুঁকিপুর্ণ পাড় বাঁধানো প্রকল্পে? খতিয়ে দেখলে পাওয়া যাবে অনিয়মের নজির। আর ভবনগুলো? ওসবের তো অধিকাংশেরই জানালা দরজা গেছে নেশাখোরদের মারণনেশার ধোয়া আর প্রহরীদের মনোরঞ্জনে। লিজ? যতো রকম অনিয়ম করা যায় তার সবই হয় লিজ দেয়া এবং তা বহাল রাখার ক্ষেত্রে। এরকম অভিযোগের তো অন্ত নেই। তারপরও অভিযোগের প্রেক্ষিতে যে তদন্ত হয়, সে খবরই বা কম কিসের?

নদীমাতৃক দেশ। পানি উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক চিত্রটাই যে পাল্টে দেয় যায় তা উপলব্ধি থেকেই তো পানি উন্নয়ন বোর্ড। নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না যে, জিকে সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর, মিরপুরসহ ঝিনাইদহ মাগুরার কিছু অংশের কৃষকদের দুর্দিন দূর করা সম্ভব হয়েছে। সেচ প্রকল্প সম্প্রসারণ দুরাস্ত, তার পূর্ণাঙ্গ কার্যকারিতাও ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। কেন? নিশ্চয় অনিয়ম, দুর্নীতি। দেশের পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ঢেলে সাজাতে না পারলে অনিয়ম দুর্নীতি দূর করে সম্পদ সম্পত্তি সুরক্ষায় সময়োপযোগী বাস্তবমুখি পদক্ষেপ নিতে হবে। দুর্নীতিবাজদের দিতে হবে উচিত শিক্ষা।