দীর্ঘ হচ্ছে সাগর বুকে মৃত্যুর মিছিল

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: বয়স মাত্র ৩ বছর। পরনে লাল টি-শার্ট আর নীল হাফপ্যান্ট। পায়ে শখের কেডস। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে স্নিগ্ধ বালুকণায় যেন শান্ত হয়ে শুয়ে আছে শিশুটি। যেন কারও ওপর ভীষণ রকম অভিমান করে মুখ লুকিয়েছে সৈকতের বুকে। ঢেউয়ে ঢেউয়ে দুলছে আদুরে দেহখানি। দূর থেকে দেখে দুলে ওঠে কোস্টগার্ডের মনও। কাছে যেতেই বোঝা গেলো সত্যিই ভীষণ রকম অভিমানে মুখ লুকিয়েছে একেবারে না ফেরার দেশে। জীবনের হিসাব-নিকাশ বুঝে ওঠার আগেই চলে গেল সে। কিন্তু কার ওপর এ অভিমান? ক্ষমতার লড়াইয়ে দিশেহারা পিতৃভূমি সিরিয়ার ওপর নাকি জাত-পাত-ধর্মের সুরায় ডুবে থাকা সীমানা বিলাসী ইউরোপের ওপর?

দেশে দেশে আর্থ-সামাজিক অস্থিরতা আর নিরাপত্তার অভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছে লাখো মানুষ। চলতি বছরে ইউরোপের উদ্দেশে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়ার চেষ্টাকালে প্রায় আড়াই হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ গত বুধবার দক্ষিণ তুরস্কের বাদরাম তীরে এক শরণার্থী শিশুর লাশ ভেসে এসেছে। তার মরদেহের ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ও বিশ্ব গণমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় তুলেছে। এ ছবিকে বলা হচ্ছে শরণার্থী ও অভিবসান প্রত্যাশী মানুষের বিভীষিকাময় ও মানবেতর পরিস্থিতিরই প্রতিচ্ছবি। এ শিশুটির পরিবার সিরিয়ার কোবানি শহরের বাসিন্দা। যারা একটু ভালো জীবনের আশায় বিপদসঙ্কুল পথে ইউরোপে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয়ের চেষ্টা করছিলো। তুরস্ক উপকূল থেকে উদ্ধার সিরিয়ার একটি শিশুর মৃতদেহের ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, প্রশ্নের মুখে ফেলেছে ইউরোপীয় শরণার্থী নীতিকে।