ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নামমাত্র মূল্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরপত্র ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের ব্যবহৃত খাতা বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। কোনো পূর্ব বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই গোপনে এসব খাতা বিক্রির চেষ্টা করছেন এ বিষয়ে গঠিত কমিটি। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, এভাবে খাতা ও উত্তরপত্র বিক্রি করে দেয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয় কয়েক লাখ টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরপত্র ও ব্যবহৃত খাতাগুলো কর্ণফুলি পেপারস মিলে সরবরাহ করা হতো। তারা কেজি হিসেবে শাদা কাগজের জন্য ১৫ টাকা এবং বাতিল অন্য কাগজের জন্য ৮ টাকা দরে মূল্য পরিশোধ করতো। জানা গেছে, কর্ণফুলি পেপারস মিল এবার কাগজ নিতে আগ্রহ প্রকাশ না করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার খাতার উত্তরপত্র ও অন্যান্য খাতা বিক্রির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মকবুল হোসেনকে আহ্বায়ক করে গত শনিবার তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দেয়া হয়। কমিটির অন্যরা হলেন- এস্টেট শাখার প্রধান পারভেজ মিয়া এবং হিসাব ও অর্থ শাখার আয়াত আলী। শনিবার এ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান প্রকৌশল অফিসে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে পানির দামে তাদেরই পরিচিত এক প্রতিষ্ঠানের কাছে কাগজ বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। ওই প্রতিষ্ঠান কেজি প্রতি গড়ে ১০ টাকা দিতে চেয়েছে যা কর্ণফুলি পেপারস মিল থেকে প্রদত্ত কেজি প্রতি ৫ টাকা কম। অভিযোগ রয়েছে, প্রধান প্রকৌশলী মকবুল হোসেন ও এস্টেট শাখার প্রধান পারভেজ মিয়া কেজি প্রতি ১০ টাকা দরে বিক্রি দেখালেও তারা ঠিকই ওই প্রতিষ্ঠানের কাছে কেজি প্রতি ১৮-২০ টাকা দরে বিক্রি করবে এবং বাকি টাকাগুলো তাদের পকেটে যাবে। এস্টেট শাখা ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, গোডাউনে যত খাতা রয়েছে তার আনুমানিক মূল্য চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কিছু বিক্রির ক্ষেত্রে টেন্ডার আহ্বান বা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নিয়ম থাকলেও খাতা বিক্রির বিষয়ে কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি।
এ বিষয়ে বিক্রয় কমিটির প্রধান প্রধান প্রকৌশলী মকবুল হোসেন বলেন, বিক্রির কাজ এখনও সম্পন্ন হয়নি। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিজ্ঞপ্তি না দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে কোনো কিছু না বলে নিবর থাকেন। এক পর্যায়ে বলেন, বিজ্ঞপ্তি না দিলেও সবাই বিষয়টি জানতে পেরেছে। কম মূল্যে কেন বিক্রি করা হচ্ছে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, কোনো বারেই এক্ষেত্রে ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায় না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, চুপিসারে এসব উত্তরপত্র ও খাতা বিক্রি করে দেয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মোটা অঙ্কের টাকা থেকে বঞ্চিত হবে। বিক্রয় প্রক্রিয়াটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার মাধ্যমে নিয়মানুযায়ী হওয়া উচিত।