স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হাটে মুদ্রা বিনিময়ের জন্য ব্যাংকের পাশাপাশি সীমিত আকারে মানিচেঞ্জার নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সিদ্ধান্ত নেয়ার পর সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক এক চিঠির মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে তা জানিয়েছে। এদিকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা জয়নগর, জীবননগর সীমান্তে ও মেহেরপুরের মুজিবনগরে সীমান্ত হাট বাসানোর ফাইল আটকে আছে প্রশাসনিক দফতরে। ফলে কবে নাগাদ এ হাট শুরু হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. আহসান উল্লাহ বলেন, ব্যাংকগুলোর লোকসান কমানো এবং সীমান্ত হাটে অনানুষ্ঠানিক লেনদেন কমানোসহ লেনদেন ব্যবস্থার সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় দু দেশের সীমান্তের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসরত জনগণের সুবিধার জন্য পাইলট ভিত্তিতে সীমান্ত হাট (বর্ডার হাট) স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। দুটো হাট দিয়ে শুরু হলেও এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা, সুনামগঞ্জের লাউয়াগড় ও ফেনীর ছাগলনাইয়াতে তিনটি হাট চলছে। এছাড়া আরও কয়েকটি হাট চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে উভয় দেশ। তিনটি হাটের মধ্যে কসবা ও ছাগলনাইয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের মুদ্রা বিনিময় সেবা দিতে সোনালী ব্যাংক এবং লাউয়াগড়ে জনতা ব্যাংককে মনোনীত করে বাংলাদেশ সরকার। ভারত সরকারের মনোনীত ব্যাংক হচ্ছে স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া ও ইউকো ব্যাংক। ভারত সরকার এ দুটো ব্যাংকের পাশাপাশি সীমিত আকারে মানি চেঞ্জারদেরও অনুমোদন দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, সীমান্ত হাটের জন্য সোনালী ব্যাংকের রাজীবপুর শাখা কাজ করে। ওই শাখায় বর্তমানে ৪১ লাখ ২৩ হাজার ৬৫৯ রুপি স্থিতি জমেছে। প্রতি হাটে এই শাখায় গড়ে ১০ হাজার রুপি জমা হয়। সোনালী ব্যাংকের ছাগলনাইয়া শাখা সেখানকার হাটে এ বিষয়ক কার্যক্রম এখনও শুরু করেনি। জনতা ব্যাংকের সুনামগঞ্জ শাখায় জমা হয়েছে এক লাখ ৯৬ হাজার ৭৩০ রুপি। হাটবারে এ শাখায়ও ১০ হাজার রুপি লেনদেন হয়। ব্যাংক দুটোর শাখায় প্রচুর পরিমাণে ভারতীয় মুদ্রা পুঞ্জিভূত হয়ে পড়ায় তারা লোকসান গুনছে। কারণ ভারতীয় প্রতিসঙ্গী ব্যাংকের সাথে রুপি বিনিময়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। এছাড়া হাটে বিনিময় ব্যবস্থা চালু থাকায় অধিকাংশ লেনদেন ক্রেতা-বিক্রেতা পর্যায়ে নিষ্পত্তি সম্ভবপর হচ্ছে। ফলে হাটের মোট লেনদেনের সামান্য অংশ আনুষ্ঠানিক মুদ্রা বিনিময় ব্যবস্থায় প্রবেশ করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, বর্ডার হাটে মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় বেশ কিছু সমস্যা ইতোমধ্যে দেখা দিয়েছে। ব্যাংকের কাছে বেশি পরিমাণে রুপি জমে যাচ্ছে, যাতে ব্যাংকের টাকা আটকে থাকছে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনানুষ্ঠানিক লেনদেন হচ্ছে। আবার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক হচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে, বর্ডার হাটে মানি চেঞ্জার দেওয়া হলে এসব সমস্যার সমাধান হবে। কিছুদিন আগে বর্ডার হাটে ক্রেতার ক্রয় সীমা ১০০ ডলার থেকে বাড়িয়ে ২০০ ডলার করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।