দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী তোলা নিয়ে দু বাসের চালক-হেলপারের পাল্লাপাল্লি
দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডে বাসে যাত্রী তোলা নিয়ে আবারও প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে বাসচালকদের মধ্যে। কোনো বাসচালকই দাঁড়াচ্ছেন না নির্ধারিত স্থানে। ফলে যাত্রী দুর্ভোগ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। বাসে যাত্রী তোলা নিয়ে দু বাসের হুড়োহুড়ির কারণে মাসহ কোলে থাকা জুঁই নামের দেড় বছর বয়সী এক শিশু পিচরোডে আছড়ে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছে। আহত গৃহবধূ আসমা খাতুন (২৪) ও শিশু জুঁইকে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, আঞ্চলিক মহাসড়কে অবৈধযান চলাচল বন্ধ হওয়ার পর থেকে এখন কোনো বাসেই আর জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। ঠাসাঠাসি করেও বাসের মধ্যে জায়গা না পেয়ে ঝুলে ঝুলে যেতে দেখা যাচ্ছে মহিলা যাত্রীকেও। বাসের ভেতর ও ছাদে জায়গা না থাকা স্বত্বেও আরো যাত্রী ওঠানো নিয়ে বাসচালকদের মধ্যে আগের সেই প্রতিযোগিতা আবারও শুরু হয়ে গেছে। ফলে একদিকে যেমন বেড়ে গেছে যাত্রী দুর্ভোগ অপর দিকে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাসচালকদের হুড়োহুড়ির কারণে ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। গতকাল রোববার বেলা ১২টার দিকে দামুড়হুদা বাজারপাড়ার মেয়ে উত্তরচাঁদপুরের গৃহবধূ আসমা খাতুন তার দেড় বছর বয়সী মেয়েকে কোলে নিয়ে রাস্তা পার হওয়ার সময় দর্শনা থেকে চুয়াডাঙ্গা অভিমুখে ছেড়ে আসা একটি চলন্ত বাস যাত্রী ছাউনিতে না দাঁড়িয়ে সামনে ছুটে আসে। গৃহবধূ ওই বাসের ধাক্কা থেকে কোনো মতে বেঁচে পেলেও বিপরীত দিক থেকে আসা একটি চলন্ত মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা দেয়। এ সময় গৃহবধূ ও তার কোলে থাকা দেড় বছর বয়সী শিশু জুঁই পিচরোডে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পুলিশসহ পথচারীরা ছুটে এসে মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে এবং প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। গৃহবধূর ডান পায়ে এবং শিশু জুঁইয়ের মাথায় প্রচণ্ড আঘাত লাগে। এ বিষয়ে বেশ কিছু বাসযাত্রীসহ দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড এলাকার দোকানিরা বাসচালকদের ওপর অনেকটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নসিমন-করিমন চলা বন্ধ হওয়ায় আবার শুরু হয়ে গেলো বাসচালকদের দৌরাত্ম্য। যাত্রী ছাউনিতে না দাঁড়িয়ে দামুড়হুদা থেকে চুয়াডাঙ্গা অভিমুখের ঠিক টার্নিং পয়েন্টে দাঁড়াবে। তাদের এই খেয়ালিপনায় ইতঃপূর্বে তিনজনের প্রাণ হারাতে হয়েছে। আর খেয়াল খুশিমতো যেখানে সেখানে দাঁড়ানো, বাসে জায়গা না থাকা স্বত্বেও যাত্রী ওঠানো এ ধরনের সমস্যা তো আছেই। তাদের এ আচরণের কারণেই যাত্রীরা বাসে না উঠে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও অবৈধযানে যাতায়াত করতেন।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডে দায়িত্বরত বাসনিয়ন্ত্রক মিরাজুল ইসলাম মিরাজ বলেন, যাত্রীদের যাতে আর এ ধরনের সমস্যার সম্মুখিন না হতে হয় সেদিক খেয়াল রাখাসহ এখন থেকে প্রতিটি বাস যাতে যাত্রী ছাউনির সামনে দাঁড়ায় সে ব্যবস্থাও নেয়া হবে।