স্টাফ রিপোর্টার: কুষ্টিয়া মিরপুরের পল্লি উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) কর্মকর্তা ফজলুল হকের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি ওই চেক জালিয়াতি বিষয়ে কয়েক দফা তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়া যায়। তবে অভিযোগ উঠেছে এ ঘটনা প্রমাণিত হওয়ার পরেও তার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সূত্র জানায়, উপজেলা পল্লি উন্নয়ন কর্মকর্তা ফজলুল হক ২০টি চেক জালিয়াতি করে প্রায় আড়াই লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে তিনি গোপনে মীমাংসা করার চেষ্টা করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই আফিসের একজন জানান, উপজেলা পল্লি উন্নয়ন কর্মকর্তা ফজলুল হকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বিআরডিবি কর্মকর্তা ফজলুল হক এই অফিসে যোগদানের পর থেকে একের পর এক দুর্নীতি-অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন। বিআরডিবি অফিসের তত্ত্বাবধায়নে যেসব প্রকল্প চলছে তাতে সুবিধাভোগীদের চাইতে ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে লাভবান হয়েছেন অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তা।
জানা গেছে, বিআরডিবি কর্মকর্তা ফজলুল হকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির অর্থ ও ভুয়া নামে ঋণ উত্তোলন করে টাকা আত্মসাৎসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার কয়েকটি ভুয়া সমিতির কাগজপত্র দেখিয়ে তিনি ২০টি চেকের মাধ্যমে প্রায় আড়াই লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। এ বিষয়ে বিআরডিবি অফিসে একটি তদন্ত হলে তার এ দুনীতি ধরা পড়ে। তবে তদন্তকারী ওই কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ফেলায় ফজলুল হকের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যাদের নামে ওইসব চেক ইস্যু করা হয়েছে তাদের নাম পরিচয়েও রয়েছে যথেষ্ট গরমিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মচারী এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা সব জেনেও কিছু বলতে পারি না। বলতে গেলে তিনি আমাদের বেতন বন্ধ করে দেবেন। তার অনিয়ম, দুর্নীতি কারণে বিআরডিবি অফিসের কর্মচারীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। ওই কর্মচারী আরো বলেন, বিআরডিবি অফিসে কর্মচারীরা বেতন-ভাতা উত্তোলন করতে গেলেও ফজলুল হক উৎকোচ গ্রহণ করেন। এমনকি উৎকোচ ছাড়া তিনি সমিতির সদস্যদের পাস বইও প্রদান করেন না।
এদিকে পল্লি উন্নয়ন বোর্ড বিআরডিবি মিরপুর উপজেলা অফিসের অধিনে ১১৫টি সমিতি রয়েছে। এসব সমিতিতে স্বজনপ্রীতির মধ্যমে বিআরডিবি কর্মকর্তা ফজলুল হক যাচাই-বাছাই ছাড়াই ঋণ প্রদান করেন। অথচ এসব ঋণগ্রহীতা প্রকৃত সদস্য না হওয়ায় এবং স্বাক্ষর জাল হওয়ায় মামলা করাও যাচ্ছে না। ফলে দিনের পর দিন অনাদায়ী থাকছে সরকারের লাখ লাখ টাকা। প্রসঙ্গত, মিরপুর উপজেলার পল্লি উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) কর্মকর্তা ফজলুল হকের বিরুদ্ধে ইতঃপূর্বে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ একটি মামলা হয়।