শ্রী শ্রী ১০৮ স্বামী নিগমানন্দ পরমহংসদেবের ১৩৬তম বার্ষিক সার্বভৌম জন্মোৎসব আজ

মহাসিন আলী: ‘নর-ই সাক্ষাৎ নারায়ণ। সুতরাং নরের সেবা ব্যতীত নারায়ণের কৃপা হয় না। তাই গার্হস্থ্য ধর্মের এতো মাহাত্ম্য। আপন প্রাণকে বিশ্ব প্রাণের সহিত মিলাইতে হইবে।’ সোনাতন ধর্মালম্ব ভক্ত অনুরাগীরা এ তত্ত্ব জানিয়ে বলেছেন, আদর্শ গার্হস্থ্য জীবন প্রতিষ্ঠাই যার মুখ্য উদ্দেশ্য, তিনি আর কেউ নন; তিনি সদ্গুরু নিগমানন্দ সরস্বতী পরমহংসদেব। সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের নাতি। যোগীগুরু, জ্ঞানীগুরু, তান্ত্রিকগুরু, প্রেমিকগুরু, ব্রহ্মচর্য্য সাধন, বেদান্তবিবেক, তত্ত্বমালা আদি গ্রন্থ রচয়িতা মেহেরপুর সদর উপজেলার কুতুবপুর শ্রী শ্রী গুরুধামে পরমহংস পরিব্রাজকাচার্য্য শ্রী শ্রী ১০৮ স্বামী নিগমানন্দ সরস্বতী পরমহংসদেব।

এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আজ (২৯ আগস্ট) শনিবার পূর্ণ ঝুলন পূর্ণিমা তিথিতে মেহেরপুর সদর উপজেলার ভৈরব নদ তটস্থ শ্রী শ্রী ঠাকুরের পূর্ণ জন্মভুমি নিগমানুরাগীদের পরম পূণ্যতীর্থ কুতুবপুর শ্রী শ্রী গুরুধামে পরমহংস পরিব্রাজকাচার্য শ্রী শ্রী ১০৮ স্বামী নিগমানন্দ সরস্বতী পরমহংসদেবের ১৩৬তম বার্ষিক সার্বভৌম জন্মোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় অধিবাস ও আজ শনিবার শ্রী শ্রী গুরুব্রহ্মের আসনে বিশেষ পূজা, হোম, স্বাধ্যায়, অঞ্জলি প্রদান, দীক্ষাদান, মধ্যাহ্ন ভোগরাগ, দরিদ্র নর-নারায়ণের সেবা, শ্রী শ্রী ঠাকুর মহারাজের জীবনী বাণী, আদর্শ-উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ও ভাবধারার ওপর আলোচনা এবং বিকেলে ধর্মসভা ইত্যাদি সদকর্ম অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছর এ সময় অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে বহু ভক্ত আসেন মেহেরপুরের কুতুবপুর শ্রী শ্রী গুরুধামে। সম্প্রতি কুতুবপুর শ্রী শ্রী গুরুধামে পরমহংস পরিব্রাজকাচার্য ১০৮ স্বামী নিগমানন্দ সরস্বতীদেবের ভক্তদের জন্য নতুন একটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। যার নাম ভূবন-মানিক্য ভবন।

মহাপুরুষের জন্মস্থান দর্শনের জন্য বছরের প্রায় সব সময় বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে শ্রী শ্রী ঠাকুর মহারাজের ভক্ত-শিষ্যগণ এসে থাকেন। দাতব্য চিকিৎসালয়টি বর্তমানে বন্ধ থাকলেও তারই জায়গায় প্রতিষ্ঠিত সরকারি কমিউনিটি সেন্টারটি স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে। পরমহংস দেব প্রতিষ্ঠিত কাথুলী নিগমানন্দ সারস্বত মন্দির নামক উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়টির অস্তিত্ব বর্তমানে বিলুপ্ত হলেও বিদ্যালয়টির ৩৬ দশমিক ১৮ একর সম্পত্তি বর্তমানে আছে।

মোট ৭২ শতাংশ জমির ওপর গুরধাম মন্দিরটি অবস্থিত। গুরুধামের প্রধান দায়িত্বে আছেন সেবায়েৎ শ্রীমৎ স্বামী অখণ্ডানন্দ সরস্বতী মহারাজ। এটিসহ মেহেরপুর শহর, মাগুরা, বরিশাল, বগুড়া, দিনাজপুর, রংপুর ও চট্টগ্রামের আশ্রমসমূহ পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন সারা বাংলাদেশের ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিচালনা বোর্ড। এছাড়াও ভারতবর্ষে রয়েছে অর্ধশতাধিক আশ্রম। বাংলাদেশ ও ভারতের আশ্রম, সংঘাশ্রম ও সঙ্ঘসমূহ নিয়ন্ত্রণ করেন আসাম-বঙ্গীয় সারস্বত মঠের নতুন মোহান্ত শ্রীমৎ স্বামী দিব্যানন্দ সরস্বতী। ভারতের আসাম প্রদেশের যোরহাট জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে কোকিলা মুখ নামক স্থানে এ মঠটি শ্রী শ্রী ১০৮ স্বামী নিগমানন্দ সরস্বতী পরমহংসদেব নিজ হাতেই প্রতিষ্ঠা করেন।

Leave a comment