চুয়াডাঙ্গায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বহিষ্কার ২ : এক হাজার ৮৩২ জন অনুপস্থিত

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার জন্য সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০১৪’র লিখিত পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেল তিনটায় ১২টি কেন্দ্রে একযোগে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষায় আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুজন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গায় সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ১২টি কেন্দ্রে ৮ হাজার ১১৫ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করার কথা ছিলো। কিন্তু নানা কারণে পরীক্ষায় অনুপস্থিতির সংখ্যা ১ হাজার ৮৩২ জন। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে ১ হাজার ৫০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩১৮ জন, আদর্শ সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ৮০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৯৬ জন, ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২১৪ জন, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৯০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৮৮ জন, ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৫০ জন, আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯৭ জন, রাহেলা খাতুন খাতুন গার্লস একাডেমি কেন্দ্রে ৪০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯২ জন, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০২ জন, এমএ বারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৫০ জন, সীমান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৩১ জন, পৌর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে ৬০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৪৩ জন এবং ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে ২১৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫১ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন। লিখিত পরীক্ষা বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে চলে বিকেল ৪টা ২০ মিনিট পর্যন্ত।

চুয়াডাঙ্গা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নূর হোসেন জানান, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিটের মাথায় বিদ্যালয়ের ৫নং কক্ষে রোল নং ১৫৯৯৪ এবং ৬ নং কক্ষে রোল নং ১৬০৪১ দুজন পুরুষ পরীক্ষার্থীকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন নাহার মোবাইলফোন দেখার অভিযোগে পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করেন। এ দুজনের নাম পরিচয় জানাতে পারেননি প্রধান শিক্ষক।

চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামান জানান, সরকারি কলেজ কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি ৩১৮ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন। পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। একই ধরনের মন্তব্য করেছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধানরা। শিক্ষক নিবন্ধনসহ কয়েকটি নিয়োগ পরীক্ষা থাকায় অনুপস্থিতির সংখ্যা বেশি হয়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।

এদিকে চুয়াডাঙ্গায় অনুষ্ঠিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিকে ‘সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ঢাকা থেকে পাঠানো প্রশ্নপত্র ১০টি ফটোকপি মেশিনের সাহায়্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ফটোকপি করা হয়। আগে ঢাকা বিজি প্রেসে ছাপানো হতো। কিন্তু বার বার প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কারণে এবারই প্রথম চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের ১৭টি জেলায় জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সহযোগিতায় গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে প্রশ্ন ফটোকপি কার্যক্রম শুরু হয়। প্রশাসনের কর্মকর্তারা ওই ঘরে ঢুকে আর বের হতে পারেননি। মোবাইলফোন বহন করা সম্পূর্ণ নিষেধ ছিলো। যারা এ কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন তারা বিকেলে বাড়ি ফেরেন বলে জানা গেছে। এরপর বিকেলে লিখিত পরীক্ষা শেষে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে উত্তরপত্র গণনা শেষে মূল কেন্দ্রে নেয়া হয়। রাতেই উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) পাঠানো হয়েছে।

Leave a comment