কাজী নজরুলের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৭৬ সালের ২৭ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি হাসপাতাল) তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।

জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে। জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। গতকাল বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের এক সংবাদ বিঞ্জপ্তিতে বলা হয়, কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে কোরআনখানি অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া সকাল ৭টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সমাবেশ ও সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে উপাচার্যের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা সহকারে কবির সমাধি প্রাঙ্গণে গমন, পুষ্পার্পণ এবং ফাতেহা পাঠ। পরে কবির মাজার প্রাঙ্গণে উপাচার্যের সভাপতিত্বে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সকাল ৮টায় জাতীয় কবির সমাধিতে পুষ্পমাল্য নিবেদন, ফাতেয়া পাঠ ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের এ কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন কবির মাজারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হবে।

বিএনপির সহদফতর সম্পাদক মো. আব্দুল লতিফ জনি স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পুস্পার্ঘ্য অর্পণ অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান এবং বিএনপির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপনসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে যথাসময়ে মাজার প্রাঙ্গণে উপস্থিত থাকতে দলের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিশ্ব বাঙালি সম্মেলন ও বিশ্ব কবিতা কংগ্রেস সকালে ৮টা ৩০ মিনিটে কবির সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও রুহের মাগফেরাত কামনাসহ মোনাজাত এবং কবিতা পাঠের আয়োজন করেছে। কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা একাডেমী গতকাল বুধবার বিকেল ৪টায় একাডেমীর কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে একক বক্তৃতা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এদিকে জাতীয় কবির ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার স্মৃতিজড়িত কুমিল্লায় নজরুল পরিষদের উদ্যোগে দিনব্যাপি অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এদিন সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে চেতনায় নজরুল স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হবে। এছাড়াও দিবসের অন্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আলোচনাসভা, কবিতা আবৃত্তি, হামদ-নাত পরিবেশন ও দোয়া মাহফিল।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম দুখু মিয়া। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন। বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। প্রেম, দ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিলো প্রেরণার উৎস।

Leave a comment