অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন সংশোধন প্রস্তাব আবার ফেরত

স্টাফ রিপোর্টার: মন্ত্রীদের প্রবল আপত্তির মুখে মন্ত্রিসভা বৈঠক থেকে আবারও ফেরত গেলো অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের সংশোধনীর খসড়া। বারবার আইনটি সংশোধনের প্রস্তাব করায় গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ও সচিব শফিউল আলম অন্যান্য মন্ত্রীর তোপের মুখেও পড়েন। ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে আইনটি সংশোধনের জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। গত ১০ নভেম্বর এটি সংশোধনের জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠকে তোলা হলে মন্ত্রীদের আপত্তির মুখে তা ফেরত পাঠানো হয়েছিলো। তবে প্রয়োজনীয় সংশোধনীর অভাবে সংশ্লিষ্টদের হয়রানি বাড়বে বলে জানিয়েছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে মোটরযান চলাচলের চুক্তি অনুসমর্থনের প্রস্তাব গতকাল অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। গতকালের মন্ত্রিসভা বৈঠকের এজেন্ডার শীর্ষে ছিলো অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ (সংশোধন) আইন-২০১৫’র খসড়ার নীতিগত অনুমোদন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের এজেন্ডাটি উপস্থাপনের সাথে সাথে ফ্লোর নেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন সিকদার। তিনি জানান, অর্পিত সম্পত্তির খ তফসিল বাতিল করা হয়েছে। এ-সংক্রান্ত সংশোধনী সংসদে পাসও হয়েছে। সেই খ তফসিল আবার পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবারের প্রস্তাবিত সংশোধনীতে। এতে সংশ্লিষ্টদের হয়রানি বাড়বে।

বীরেন সিকদারের এ যুক্তি প্রধানমন্ত্রীও মেনে নেন। উল্লেখ্য, এর আগে আইনটি ছয় দফা সংশোধন করা হয়। বৈঠকে একজন মন্ত্রী বলেন, সরকার সমস্যাটি নিষ্পত্তির চেষ্টা করছে। কিন্তু সচিবালয়ের আমলা থেকে মাঠ পর্যায়ের ভূমিসংক্রান্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পদে পদে বাধা সৃষ্টি করছেন। এ কারণে প্রশ্ন উঠছে, সরকার কি সমস্যাটি সমাধানে সত্যি আন্তরিক? আবারও খ তফসিল পুনরুজ্জীবিত করলে সেই আন্তরিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

একপর্যায়ে আলোচনায় অংশ নেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। ২০০৯ সালে অর্পিত সম্পত্তি আইনটি যখন সংশোধন করে কার্যকরের উদ্যোগ নেয়া হয় তখন তিনি ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি জানান, খ তফসিল আবার ফিরিয়ে আনা হলে সংশ্লিষ্টদের কাছে ভুল বার্তা যাবে। সেটেলড ইস্যু আনসেটেলড করা হবে। রুল (পেনসিল) দিয়ে ভিপি লিখে দিলেই অর্পিত সম্পত্তি হয়ে যায় না। অথচ খ তফসিলের বেশির ভাগ অর্পিত সম্পত্তির উদ্ভব হয়েছে এভাবে। কার স্বার্থে বারবার আইনটি সংশোধনীর জন্য আনা হচ্ছে? ডিসি বারবার আইনটি সংশোধনের সুপারিশ করছেন কেন? আইনটি কার্যকর হওয়ার পর অনেক দিন পেরিয়ে গেছে। এতোদিনে কয়টি সম্পত্তি সংশ্লিষ্টদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে? মামলার রায়ের পরও সংশ্লিষ্টরা সম্পত্তি ফিরে পাচ্ছেন না।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, নতুন করে আইনটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখা দরকার। আইনমন্ত্রী ছাড়াও এ-সংক্রান্ত আলোচনায় কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতসহ প্রায় সব মন্ত্রী অংশ নেন।