গণপিটুনি বা ক্রসফায়ারের নামে বিচার বহির্ভূত হত্যা বন্ধ হোক

 

গণপিটুনি কখন হয়? কেন হয়? এসব প্রশ্নের নানামুখি জবাব আছে। আছে যুক্তিও। যতো জবাবই থাকুক, আর যতো যুক্তিই থাক- গণপিটুনি দিয়ে হত্যা যেমন সভ্যতা নয়, তেমনই দেশে প্রচলিত আইনে সমর্থনও করে না। আর বন্দুকযুদ্ধ? যা ঘটছে তা অবশ্যই উদ্বেগজনক। এসব বন্ধে বাস্তবমুখি পদক্ষেপের দাবি ক্রমশ জোরদার হচ্ছে।

বিভিন্ন স্থানে একদিনেই গণপিটুনিতে ৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার সন্ধ্যার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায় ছিনতাইকারী সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয় চারজনকে। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ডাকাত সন্দেহে নরসিংদীর মনোহরদীতে পিটিয়ে মারা হয়েছে দুজনকে। এ ধরনের গণপিটুনির ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটছে। মানুষ যখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর আস্থা হারায় তখনই নিজের হাতে আইন তুলে নেয়। এটা অশনি সঙ্কেত। বিষয়টি অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে। গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনাকে ‘গণ’ বলে চালিয়ে দিয়ে পার পাওয়ার কোনো অবকাশ নেই। কী কারণে মানুষের মধ্যে এই রোষ সৃষ্টি হয় সেটি অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে। অপরাধীর শাস্তি না হওয়া এবং সময়মতো বা ঠিকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা না পাওয়া, অপরাধীরা ধরা পড়লেও আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে আসা এসব কারণে সাধারণ মানুষ আস্থাহীনতায় ভোগে বটে। এরপরও হিংস্রতা কি সমর্থন করা যায়?

জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আইন-আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা অটুট রাখতে যার যা করণীয় তা যেমন করতে হবে, তেমনই আমজনতাকেও দায়িত্বশীল হতে হবে। হুচুকে মেতে সর্বনাশ করার পর হাহুতাশ দায়িত্বশীলতা নয়। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ দরকার। দরকার আইন প্রয়োগে স্বচ্ছতা। আইন প্রয়োগে নিয়োজিতদের পেশদারত্ব।