মায়ের অভিযোগে নেশাখোর দু ছেলের ৩ বছরের জেল

নেশার টাকা জোগাড়ে বাড়ির টিন খুলে বিক্রি

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার বেলগাছি সিগনালপাড়ার (মুসলিমপাড়া) বাসিন্দা স্বামীহারা সামসুন্নাহার। বছর দশেক আগে মারা গেছেন স্বামী মহসীন খাঁ। তার রেখে যাওয়া ৫ কাঠা জমিতে মাটির দেয়াল ও টিনের ছাউনি দেয়া বাড়িতে দু ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে বসবাস করেন সামসুন্নাহার। স্বামী মারা যাওয়ার আগেই তার দু ছেলে নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে। সংসারের জিনিস বিক্রি করে নেশা করে দু ছেলে মাসুম রানা (৩৮) ও টেনিয়া (৩২)। আর কিছু না পেয়ে বসত বাড়ির ৫ কাঠা জমির অর্ধেক বিক্রি করে তাদের ব্যবসার কাজে লাগিয়েছি। তাও নেশা করে শেষ করেছে। বাকি জমি টুকু বিক্রি করে দেয়ার জন্য আমাকে সব সময় মারধোর করে তারা। জমি বিক্রি না করতে চাইলে এখন প্রতিদিন একটি করে ঘরের চালের টিন খুলে বিক্রি করে তারা দুজনে নেশা করে। নেশা করার কারণে দু ছেলের বউ চলে গেছে বাবার বাড়ি। আমি আর পারছিনা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন সামসুন্নাহার।

উপরোক্ত কষ্টের কথা চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করে নিরাপত্তা চাওয়ার পাশাপাশি তাদেকে গ্রেফতার করার আহ্বান জানান অসহায় মা সামসুন্নাহার। এ অভিযোগের ভিত্তিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেএম মামুনউজ্জামানের নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের ইন্সপেক্টর মিলন কুমার মুখার্জী, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের এসআই নিরঞ্জন কুমার শিক্দার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গতকাল বুধবার দুপুরে অভিযান চালান বেলগাছি সিগনালপাড়ায়। তাদেরকে আটক করে তাৎক্ষনিক ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে দু সহোদরকে জেল দেয়া হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বড় ভাই মাসুম রানাকে (৩৮) ২ বছরের বিনাশ্রম ও ছোট ভাই টেনিয়াকে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কেএম মামুনউজ্জামান। গতকাল বিকেলে তাদের দু ভাইকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।