চুয়াডাঙ্গায় মোটরসাইকেলযোগে বাড়িতে ঢুকে একদল যুবকের দুর্বৃত্তায়ন : সশস্ত্র হামলা
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান সাদিদকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। একদল দুর্বৃত্ত থানা কাউন্সিলপাড়ার বাড়িতে ঢুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। ওই দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলযোগে এসে গতরাত সোয়া ৯টার দিকে এ তাণ্ডব চালায়। তারা পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করতেও উদ্যত হয়। সাদিদকে চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। তার মাথায় জোরালো কোপের গুরুতর আঘাত লেগেছে বলে হাসপাতালসূত্রে জানা গেছে।
চুয়াডাঙ্গা মসজিদপাড়ার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে হাবিবুর রহমান সাদিদ (৪০) জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। তিনি বর্তমানে বিশুদ্ধ পানির ব্যবসা করেন। চুয়াডাঙ্গা থানা কাউন্সিলপাড়ায় তার বড় ভাই মোস্তাফিজুর রহমান শামীমের বাড়ির সাথেই তার অমিয় বিশুদ্ধ পানির কারখানা রয়েছে। সেখানেই গতরাতে অবস্থান করছিলেন তিনি।
সূত্র জানায়, রাত সোয়া ৯টার দিকে ৪টি মোটরসাইকেলযোগে একদল যুবক সেখানে গিয়ে নামে। তারা বাড়ির কলিং বেল টিপলে ভেতর থেকে সাদিদ গেট খুলে দেন। সাথে সাথে কিছু বলার আগেই তার ওপর হামলে পড়ে ওই দুর্বৃত্ত যুবকরা। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাদিদকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এক পর্যায়ে পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করতেও উদ্যত হয় তারা। এ সময় সাদিদ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দুর্বত্ত যুবকরা মোটরসাইকেলে উঠে সটকে পড়ে। সাদিদকে উদ্ধার করে রক্তাক্ত অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সার্জিক্যাল কনসালটেন্ট ডা. ওয়ালিউর রহমান নয়ন তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। ঢাকায় নেয়ার আগে রাত পৌনে ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) ছুফিউল্লাহ হাসপাতলের ইমারজেন্সিতে চিকিৎসা নেয়া অবস্থায় সাদিদের কাছে তার ওপর হামলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে সাদিদ ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন। এরপর সাংবাদিকরা পুলিশ কর্মকর্তা ছুফিউল্লাহর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, যেহেতু ঘটনাটি সদর থানার মধ্যে হয়েছে, সেহেতু আপনারা অফিসার ইনচার্জের কাছ থেকে সব কিছু জানবেন। এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ লিয়াকত হোসেন জানান, সাদিদের মুখ থেকে অভিযোগ শুনেছি, কিন্তু লিখিত আকারে কোনো অভিযোগ না পাওয়ায় অভিযুক্তদের ব্যাপারে কিছু বলতে পারছি না। ওসি (তদন্ত) এএইচএম কামরুজ্জামান বলেন, হাসপাতালে গিয়ে সাদিদের মুখ থেকে ঘটনা শুনেছি। কিন্তু থানায় কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে এটা কি রাজনৈতিক ব্যাপার না তাদের ব্যবসায়িক বিষয় তা অভিযোগের পর তদন্ত করলেই বোঝা যাবে। তিনি বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সাদিদের পক্ষ থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় কোনো অভিযোগ বা মামলা করা হয়নি।
হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়ার সময় জখম হাবিবুর রহমান সাদিদ সাংবাদিকদের কাছে জানান, শহরের ঈদগাহপাড়ার লিয়াকতসহ কয়েকজন কয়েক দিন আগে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে তা তদন্ত করেন অফিসার ইনচার্জ ( তদন্ত) কামরুজ্জামান। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কামরুজ্জামান মাথাভাঙ্গাকে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায়, সেটা চাঁদাবাজির কিছু নয়। তা ছিলো তাদের ব্যবসায়িক লেনদেন। বিষয়টি দু পক্ষকে থানায় ডেকে সমঝোতা করিয়ে দেয়া হয়। সাদিদের মাথায়, ডান হাত, ডান পায়ে কয়েকটি মারাত্মক কোপের চিহ্ন রয়েছে। তার ছোট ভাই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডা. মশিউর রহমান সাদিদের গুরুতর অবস্থা দেখে শোকে কাতর হয়ে পড়েন। তিনি দোষীদের শাস্তি দাবি করেন। গতরাত ১২টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে সাদিদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশে নেয়া হয়।