ডাক্তার সেজে অপচিকিৎসা : ঝরছে প্রাণ

আলমডাঙ্গায় সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে বিষপান রোগীর চিকিৎসালয় নামে প্রকাশ্যে প্রতারণা

 

স্টাফ রিপোর্টার: নিজ বাড়িতে নিজের নামের আগে ডাক্তার লিখে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে প্রকাশ্যে প্রতারণা করছেন শহিদুল ইসলাম। আলমডাঙ্গা পশুহাট সংলগ্ন বাবুপাড়ার ওই সাইনবোর্ডধারী ব্যক্তির অপচিকিৎসায় গতপরশু প্রাণ ঝরে আলমডাঙ্গা গোবিন্দপুরের ওয়াকার হাসান ডাবুর। তার মৃত্যুতে শহিদুল ইসলামের প্রকাশ্যে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে প্রতারণার বিষয়টি সচেতনমহলের সামনে উঠে আসে।

সাইনবোর্ডে বড় বড় অক্ষরে লেখা আছে ‘বিষপান রোগীর চিকিৎসালয়, ডা. মো. শহিদুল ইসলাম, আরএমপি ঢাকা। এখানে উন্নত পদ্ধতিতে বিষ তোলা হয়। যার জন্য রোগীর একশ পার্সেন্ট বিষমুক্ত হয়। মোবাইল নম্বরও দেয়া আছে সাইনবোর্ডে। এই শহিদুল ইসলামের নিকট নেয়ার কারণেই গতপরশু বিষপান করা রোগী গোবিন্দপুরের শুকুর আলীর ছেলে ওয়াকার হাসান ডাবুর মৃত্যু হয়। এ মন্তব্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পরশু রাতে জরুরি বিভাগে কতর্ব্যরত চিকিৎসক ডা. রাজিবুল ইসলামের। তিনি বলেন, বিষপান রোগীর ওয়াশ করা হয়েছে আনাড়ি হাতে। এ কারণে লাঞ্চে পানি ঢুকেছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রোগীকে নেয়া হলেও তাকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

জানা গেছে, গতপরশু রাত ৯টার দিকে বিষপান করে ডাবু। তাকে তার পরিবারের লোকজন নিয়ে যায় ওই সাইনবোর্ডধারী শহিদুল ইসলামের নিকট। সেখানে ওয়াশ করা হয়। ঘণ্টাব্যাপি ওয়াশের পর রোগীর অবস্থার অবনতি হলে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। হাসপাতালে নেয়ার ঘণ্টাখানেকের মাথায় মারা যায়। এ সময় হাসপাতালের চিকিৎসক উপরোক্ত মন্তব্য করেন। গতকাল ওই শহিদুল ইসলাম সম্পর্কে খোঁজ নিতে গেলে জানা যায় নানা তথ্য। তিনি স্থানীয়দের কাছে গ্রাম্য চিকিৎসক সমিতির নেতা বলে পরিচয় দেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে আলমডাঙ্গা বাবুপাড়াস্থ পশুহাট সংলগ্ন ওই বাড়িতে গেলে সাইনবোর্ড চোখে পড়ে। তার সম্পর্কে স্থানীয়দের নিকট জানতে চাওয়া হলে অনেকেই বলেন, আন্ডার মেট্রিক শহিদুল নিজেকে ডাক্তার বলে দীর্ঘদিন ধরে পরিচয় দিয়ে একের পর এক অপকর্ম করলেও প্রশাসনের সেদিকে নজর পড়ে না। শহিদুর ইসলামের সাথে যোগাযোগ করে তার কোনো ডিগ্রি আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন- কোনো ড্রিগ্রি নেই। তবে আছে অনেক অভিজ্ঞতা। বিষপানে আত্মহত্যাকারী ডাবুকে কি চিকিৎসা দিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাকে ৩৫-৪০ মিনিট ধরে ওয়াশ করা হয়েছে। তাকে সেপটাকজন ১ এমজি ইনজেকশ ও ভেক্সবাইট ৫০০ এমজি স্যালাইন দেয়া হয়েছে।

একজন হাতুড়ে চিকিৎসক হয়েও কেন নিজের নামের আগে ডাক্তার ও নামের পর ডিগ্রি লিখেছেন কেন? এ প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তিনি নীরব থাকেন।