মাথাভাঙ্গা মনিটর: পুরো ফুটবল বিশ্বই চমকে গেছে। পুরো ফুটবল বিশ্বেরই একই প্রশ্ন এ কোন লিওনেল মেসি! প্রতিপক্ষকে এভাবে তিনি ঢুস মারতে পারেন, এ যে কল্পনাতীত। কিন্তু বার্সেলোনা তা মনে করছে না। বার্সেলোনা বরং মনে করে, ফুটবল মাঠে এমনটা ঘটতেই পারে। মেসির ঢুস অস্বাভাবিক কিছু নয়। মাঠে দু খেলোয়াড়ের আক্রমণাত্মক শরীরী ভাষা আসলেই নতুন কিছু নয়। কিন্তু নামটা মেসি বলেই বিস্মিত হতে হচ্ছে। ১১ বছরের পেশাদারি ক্যারিয়ারে লাল কার্ডই যিনি দেখেছেন মাত্র একবার। সেটিও দশ বছর আগে। গত বুধবার রোমার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে এমবিয়াকে মেসির ঢুস মারা, টুঁটি চেপে ধরা তাই ফুটবল বিশ্বকেই চমকে দিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে এই প্রথম বার্সেলোনার পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হলো। বার্সার সহসভাপতি ইয়োর্দি মেস্ত্রে বিষয়টিকে বড় করে দেখতে চাইছেন না, ‘ফুটবলে এমনটা ঘটেই। এটা ফুটবলের ছোট বিচ্ছিন্ন একটা ঘটনা হয়ে থাকবে। এটাকে এর চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়ার কিছু নেই। এটা আগে ঘটেছে, ভবিষ্যতেও ঘটবে। ফুটবল খেলায় এসব টুকটাক হয়ই। এটা আলাদা কিছু নয়।’
খুবই সাধারণ একটা ঘটনা থেকে এই ‘বিচ্ছিন্ন’ ঘটনার সূত্রপাত। কোপা আমেরিকা খেলেছেন বলে বার্সেলোনার প্রাক-মরসুমের আগের চারটি ম্যাচে মেসি-নেইমার ছিলেন না। হোয়ান গাম্পার ট্রফিতেই প্রথম মাঠে নামেন দুজন। বার্সা খেলছিলও দুর্দান্ত। খেলার ৩৩ মিনিটের মাথায় সেই ঘটনা, মেসির ক্যারিয়ারেই যা কালো দাগ ফেলে দিল। ফরাসি ডিফেন্ডার এমবিয়ার সঙ্গে ঝামেলা বাঁধিয়ে বসেন মেসি। রোমার অর্ধে বল নিয়ে এগোচ্ছিলেন মেসি, তাকে পাহারা দিয়ে রাখার দায়িত্বে ছিলেন এমবিয়া। নেইমারকে পাস দিয়ে মেসি এগিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় এমবিয়া যেভাবে আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন, সেটা হয়তো পছন্দ হয়নি মেসির। নেইমারের কাছ থেকে ফিরতি পাস পেয়ে বল নিয়ে মেসি বক্সে ঢুকে পড়েন। সামনে কেবল গোলরক্ষক। এ সময়ই রেফারির অফসাইডের বাঁশি।
এমবিয়া সে সময় মেসিকে কী যেন বলে বসেন। মুহূর্তেই মেসি রেগে আগুন। প্রথমে এমবিয়ার মাথায় মাথা ঠুকে বাক্য বিনিময় করলেন। এর পর এমবিয়ার বুকে ঢুস মেরে বসলেন। চেপে ধরলেন টুঁটি। রেফারি হলুদ কার্ড দেখিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। প্রীতি ম্যাচ বলেই হয়তো মেসিকে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিতে চাননি। প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ হলে মেসি তিন ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধও হতে পারতেন।
মেসিকে এমন খেপে যেতে অনেকেই বলছেন, টানা দুটো বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে গিয়েও আর্জেন্টিনাকে শিরোপা জেতাতে না পারা, দেশের সংবাদমাধ্যমে সমালোচনার ঝড়, গ্যাবন সফর নিয়েও নানা বিতর্ক সবকিছুরই হয়তো বিস্ফোরণ ঘটেছে এ দিন। মেস্ত্রে যেমন বলেছেন, এটি সে রকমই বিচ্ছিন্ন এক ঘটনা হলেই ভালো। মেসির নামের সাথে যে এমনটা মানায় না।