গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনীর রাজা ক্লিনিকে এক্সরে করার সময় নারী রোগীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্ত এক্সরে টেকনিশিয়ান সানা উল্লাহকে স্থায়ীভাবে অব্যহিত দেয়া হয়েছে। মৌখিক অব্যাহতির পর লিখিত অব্যাহতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।
রাজা ক্লিনিকের পরিচালক ডা. মো. পারভিয়াস হোসেন রাজা স্বাক্ষরিত অব্যহতি পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, সানা উল্লাহর বিরুদ্ধে গত ৩১ জুলাই একজন নারীর সাথে অনৈতিক আচরণের অভিযোগ ওঠে। ইতঃপূর্বে তার বিরুদ্ধে কয়েককবার একই অভিযোগ উঠেছিলো। ভবিষ্যতে এ ধরণের কোনো ঘটনা ঘটাবে না বলে সে সময় ওয়াদা এবং সামাজিকভাবেও সুপারিশ করিয়েছিলেন সানা উল্লাহ। তাই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ কয়েকবার তার সকল অপরাধ ক্ষমা করে চাকরিতে বহাল রাখে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সামাজিক অসন্তোষ চরম পর্যায়ে পৌঁছুছে। তাই প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা ও সুনাম রক্ষার্থে সানা উল্লাহকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। অব্যাহিত পত্রের অনুলিপি মেহেরপুর সিভিল সার্জন, গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরে প্রেরণ করেছে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।
এদিকে সানা উল্লাহকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দেয়ায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানিয়েছে স্বাস্থ বিভাগ, উপজেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে কিংবা সানা উল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান সিভিল সার্জন। মানবতার সেবায় নিয়োজিত স্বাস্থ বিভাগে এ ধরণের অনৈতিক কোনো কাজে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়ে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল আমিন জানান, শুধু রাজা ক্লিনিক নয় এ ব্যাপারে সব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে সতর্ক করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ ধরণের কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেদিকে নজর রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তবে সানা উল্লাহর মতো একজন অভিযুক্ত আর কোনভাবেই যেন এ ধরণের সুযোগ না পায় সেদিকেও নজরদারী ও সংশ্লিষ্টদের সদ্দিচ্ছার ঘাটতি কোনো ভাবেই সহ্য করা হবে না।
সানা উল্লাহকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দেয়ায় ভুক্তভোগীসহ এলাকার মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে। তবে আগের মতো কোনো প্রভাব বিস্তার করে পুণরায় যেন এ ধরণের কোনো সুযোগ না পায় সে দিকে নজর রাখার জন্য রাজা ক্লিনিকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয়রা। গত ৩১ জুলাই শিশিরপাড়া গ্রামের এক নারীকে রাজা ক্লিনিকে এক্সরে করার সময় সানা উল্লাহ শ্লীলতাহানি করে। ওই নারী পালিয়ে বাড়ি পৌঁছে এ কথা জানালে তার স্বজন ও এলাকার মানুষ ক্লিনিকে গিয়ে সানা উল্লাহকে মারধর করে তার শাস্তি দাবি করেন। এ নিয়ে এলাকায় প্রতিবাদ ও ক্ষোভের ঝড় ওঠে। সানা উল্লাহর শাস্তির ব্যাপারে প্রশাসনিক চাপের মুখে পড়ে রাজা ক্লিনিক। ক্লিনিকের সুনাম ধরে রাখা ও অভিযুক্তকে সাজা দিতেই ১আগস্ট সানা উল্লাহকে মৌখিকভাবে চাকরিচ্যুত করে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।