আলমডাঙ্গায় ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে বড় বোনের সাথে প্রতারণার অভিযোগ

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: ছোট ভাইকে বিশ্বাস করে চরম বিপদে পড়েছেন আলমডাঙ্গার পশু হাসপাতালপাড়ার চম্পা রানী। ভাই-বোন একসাথে বাড়ির জমি কেনার শর্তে চম্পা রানীর নিকট থেকে তার ছোট ভাই লালু মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে শুধুমাত্র নিজের নামে সে সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে নেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।

এলাকাসূত্রে ও প্রতারিত চম্পা রানীর একমাত্র ছেলে দিপু জানিয়েছেন, তার বাবা প্রদীপ চক্রবর্তী ১৮ বছর আগে আলমডাঙ্গার পশু হাসপাতালপাড়ায় ৪.৩৫ শতক জমি কিনে বসবাস শুরু করেন। পাশেই তার একমাত্র শ্যালক রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী লালুও দেড় কাঠা জমি কিনে বসবাস শুরু করেন। বাড়ি করার পর থেকে প্রদীপ চক্রবর্তী- চম্পা রানীর পরিবারে লালু তাদের স্নেহে বেড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন ভাই-বোনের সম্পর্ক ছিলো অত্যন্ত মধুর। তাদের রমরমা ব্যবসায় ধস নামার কারণে এ বিপদ নেমে আসে। প্রদীপ চক্রবর্তী আলমডাঙ্গার উত্তরা ট্রেডার্সের সাথে ব্যবসা করতে গিয়ে তাদের কাছে কয়েক লাখ টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সেই ঋণের টাকা উত্তরা ট্রেডার্সকে শোধ দিতে না পারায় একপর্যায়ে তাদের পক্ষে এমএ সালামের নামে প্রদীপ-চম্পার একমাত্র সম্বল বসত ভিটেটুকু রেজিস্ট্রি করে দিতে হয়। তবে প্রতিষ্ঠানটি টাকা ফেরত পেলে বাড়িটা প্রদীপ চক্রবর্তীকে ফিরিয়ে দিবে এমন শর্ত ছিলো। কিন্তু বিপদ এখানেই থেমে থাকেনি। এরপর প্রদীপ চক্রবর্তী জীবিকার তাগিদে লিবিয়ায় পাড়ি জমান। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস যে সে সময় লিবিয়ায় যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। এরই মধ্যে উত্তরা ট্রেডার্স তাদের বাড়ির জমি অন্যত্র বিক্রি করে দিতে চায়। দিপু জানান, তার মামা লালু তাদের পরিবারের দূরাবস্থার সুযোগে তার মা অর্থাৎ চম্পা রানীকে বলে, যে করেই হোক বাড়ি ঠেকাতে হবে। তখন চম্পা রানী ধার দেনা করে দু লাখ টাকা ছোট ভাই লালুর হাতে দেন। লালু কথা দেন উত্তরা ট্রেডার্সকে তিনি টাকা দিয়ে দু ভাই বোনের নামে বাড়িটি রেজিস্ট্রি করবেন। কিন্ত ছোট ভাই কথা রাখেননি। বড় বোনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। পুরো বাড়ি নিজের নামে লিখে নেন।

দিপু আরো জানান, এ প্রতারণার কথা জানাজানি হলে তার মামা লালু তাদেরকে কথা দেন যে, পুরো টাকা জোগাড় করতে পারলে বাড়িটি তাদেরকে ফেরত দিয়ে দেবেন। মামার কথামতো আবারও অনেক কষ্টেশিষ্টে তারা পুরো টাকা জোগাড় করে মামার এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন কিন্ত আজও তার মামা বাড়িটি তাদের ফেরত দিচ্ছেন না। অথচ মামা লালুকে পাঁচ বছর বয়স থেকে তার মায়ের কাছে বড় হয়েছেন। বড় বোন তাকে বিয়ে দিয়েছেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বয়স্ক মাকে নিয়ে এখন তারা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবেন? মামা বাড়ি ফেরত দেয়া তো দূরে থাক, তাদেরকে বাড়ি ছাড়তে নির্দেশ দিচ্ছেন।

Leave a comment